১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীদের
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রকাশিত ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা জানান, এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের প্রথম থেকে সপ্তদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা-২০২০ সাল পর্যন্ত স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় সহকারী মৌলভি ও প্রভাষক পদে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আবেদনের সুযোগ পেত এবং অনেকেই এখনো মাদ্রাসায় সহকারী মৌলভি ও প্রভাষক পদে চাকরিরত আছে।
কিন্তু ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বরে এমপিও নীতিমালা সংশোধন করে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীদের নীতিমালা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি ২০২২- এ ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ হতে উত্তীর্ণদের প্রাথমিক সুপারিশ করা হলেও চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হৃদ্রোগে আক্রান্ত শিক্ষককে চিকিৎসা
ইসলাম শিক্ষা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আমির ফয়সাল বলেন, কিছুদিন পূর্বে যে সার্কুলার প্রকাশিত হয়েছে সেখানে মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ইসলাম শিক্ষা বিভাগকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুস্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে যে সেখানে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে যে প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হয় সেখানে ইসলাম শিক্ষা বিভাগের আবেদন করতে পারবে। অথচ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) প্রণীত যে নীতিমালা সেখানে ইসলাম শিক্ষা বিভাগকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা এই প্রজ্ঞাপন বাতিল চাই।
একই বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, এই নীতি প্রয়োগ করে আমাদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমাদেরকে সুযোগ দিতে হবে। আমরা চাই যে অন্যায্য অন্যায়মূলক নীতিমালা জারি করা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে বৈষম্যমূলক নীতি। এই নীতি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। একই ধরনের লেখাপড়া করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা পাশ করছি। অথচ ধরনের নীতি প্রণয়ন করে আমাদেরকে সুযোগ বঞ্চিত করা হচ্ছে।
আব্দুর রহমান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, মূলত সমস্যাটা হচ্ছে নিয়োগের নামটা নিয়ে। আরবী প্রভাষক হিসেবে শিক্ষক নিয়োগে ইসলাম শিক্ষা বিভাগকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ এই বিভাগে সবচেয়ে বেশি আরবী চর্চা করা হয়। ধরনের নীতিমালার ফলে আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হব। ১৮ তম বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে আমরা নতুন নীতি প্রণয়ণের আহবান জানান।
উল্লেখ্য, গত ২ নভেম্বর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ ) অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা-২০২৩ এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে আরবী ও ফিকহ বিভাগে সহযোগী মৌলভি ও প্রভাষক পদে শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড হতে ফাজিল বা কামিল ডিগ্রি অথবা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় বা ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মাদ্রাসাসমূহ হতে ফাজিল বা কামিল ডিগ্রি অথবা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় হতে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিষয়ে অনার্সসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে আরবী বিষয়ে অনার্সসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নির্ধারণ করা হয়েছে।
কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ তথা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয় হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উক্ত পদসমূহে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।