চূড়ান্ত সুপারিশ পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ১৫ নিবন্ধনধারী
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে স্কুলে আবেদন করলেও মাদ্রাসায় সুপারিশ পান ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের ১৫ নিবন্ধনধারী। বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ পাননি ভুক্তভোগীরা। চূড়ান্ত সুপারিশের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, টেলিটকের রোল ব্লক জনিত সমস্যার কারণে চূড়ান্ত সুপারিশ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা। এ নিয়ে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। এই অবস্থায় চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে সময় পারছেন তারা।
ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে হাইস্কুলে ইসলাম শিক্ষা ( স্কুল) বিষয়ে আবেদন করেন। তবে তাদের মাদ্রাসার মৌলভি পদে প্রাথমিক সুপারিশ করা হয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে এনটিআরসিকে জানানো হয়। কর্তৃপক্ষ তাদের আবেদন করতে বলেন।
আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে তিন মাস পর ১৫ জনকে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে এনটিআরসিএ। পরে পুনরায় তাদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ভি-রোল ফরম পূরণ করে জমাও দেন তারা। তবে এখনো তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়নি। এনটিআরসিএ কেবল তাদের আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ চাকরিপ্রার্থীদের
মো. মাছুম বিল্লাহ নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, এনটিআরসিএ আমাদের যেভাবে বলেছে আমরা সেভাবেই আবেদন করেছি। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে আমাদের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয় নি। আমাদের কোনো ভুল নেই। আমরা সঠিকভাবে সব করেও নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ থেকে বঞ্চিত হয়েছি। এটি মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, আমরা সকল তথ্য প্রমাণসহ এনটিআরসিএতে আবেদন করেছিলাম। তবুও আমাদের সমস্যার কোনো সমাধান দেওয়া হয়নি। আমরা পরিবারের সদস্যদের বিশ্বাস করাতে পারছি না যে আমাদের চাকরি না হওয়ার পেছনে আমাদের কোন দোষ নেই। আমরা রাস্তায় বের হলে একাটাই প্রশ্ন 'সবাই জয়েন করেছে আমার কি হল; আমি যাচ্ছি না কেন?' এসব প্রশ্ন শুনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি।
মামুন হোসেন নামে আরেক ভুক্তভোগী জানান, গত ৮ জুন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমিসহ ১৫ জনকে স্কুলে নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশ করা হয়। পরে কতৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি ২য় বার সঠিক ভাবে ভি-রোল ফরম পূরণ করি। কিন্তু আমাদের কাউকে চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়নি। ইতোমধ্যে আমি আমার এনজিওর চাকরিটি ছেড়ে দিয়েছি। বর্তমানে বেকার অবস্থায় রয়েছি। পরিবার নিয়ে খুব অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছি। দ্রুত আমাদের নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করার দাবি জানাচ্ছি।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমার সনদ সংক্রান্ত কোন সমস্যা নেই। এরপরও আমাকে চুড়ান্ত সুপারিশ করা হয়নি। এনটিআরসিএতে যোগাযোগ করলে আবেদন করতে বলে। আমি আবেদন করেছি। এখনো কোন খবর নেই। খোঁজ নিতে গেলে তেমন কিছু বলে না। আমি মানসিকভাবে অনেক কষ্টে আছি। সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি। আমার বাবা আর বিশ্বাস করতে পারছে না যে আমার চাকরি হবে। পরিবার,সমাজ, প্রতিবশী , শশুর বাড়ি লোকজন কাউকে মুখ দেখাতে পারছি না। আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই।
প্রার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সদস্য এস এম মাসুদুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ইসলাম শিক্ষায় প্রাথমিক সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়ে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। আমরা এটি সমাধানের চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব না।