চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নানা অনিয়মের অভিযোগে এনটিআরসিএ বরাবর আইনি নোটিশ
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নিয়োগে নানা অনিয়ম, ভুল এবং প্রার্থীদের হয়রানির অভিযোগের ন্যায় বিচার চেয়ে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে (এনটিআরসিএ) আইনি নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। নোটিশে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে (এনটিআরসিএ), সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে বিচার চাওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসিবুর রহমান আসিফ এ নোটিশ প্রেরণ করেন। সম্প্রতি এনটিআরসিএ’র চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ভুল পদে, মেধাতালিকা এগিয়ে থেকেও সুপারিশ না পাওয়া এবং ভুল বিষয়ে মনোনয়নসহ নানা ধরনের অসঙ্গতির প্রেক্ষিতে শিক্ষকরা অসন্তোষ জানিয়ে ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন জানিয়েছেন।
এ নিয়ে অ্যাড. আসিবুর রহমান আসিফ জানান, এনটিআরসিএ’র চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নির্বাচনেরে ক্ষেত্রে যে অনিয়ম হয়েছে, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তারা সূচনালগ্ন থেকে ভালো কাজ করলেও চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির বেলায় তারা তাদের প্রচলিত নীতিমালার কোন তোয়াক্কা করেনি। নোটিশে এসব বিষয়ের সমাধান চাওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের জীবিকা তাদের বেতন থেকে আসে; তাই, এ বিষয়গুলোর সমাধান হওয়া দরকার—যুক্ত করেন অ্যাড. আসিবুর রহমান আসিফ।
এই আইনজীবী বলছেন, যদি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারে তাহলে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে আমরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্ত হব। শিক্ষকদের সাথে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি নিয়ে এনটিআরসিএ যা করেছে তা অন্যায় জানিয়ে তিনি বলেন, নোটিশে আমরা তিনজন শিক্ষকের বিস্তারিত দাবি সংযোজন করেছি; উচ্চ আদালতে যদি আমাদের যেতে হয়, তাহলে ভুক্তভোগী অন্যান্য শিক্ষকদের দাবিও আমরা তার সাথে সংযুক্ত করবো এবং তাদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতে তাদের বক্তব্য তুলে ধরবো। শিক্ষকদের ন্যায় অধিকার আদায়ে সে রিটে ভুক্তভোগী শিক্ষকদের যু্ক্ত হওয়ার আহ্বান তার।
অন্যদিক ভুল পদে সুপারিশ প্রাপ্ত কিংবা মেধাতালিকা এগিয়ে থেকেও সুপারিশ না পাওয়া প্রার্থীদের আবেদন এখনো যাচাই-বাছাইয়ের শুরু করতে পারেনি এনটিআরসিএ এবং কবে নাগাদ তা শুরু হবে সেটিও বলতে পারছেন না প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কর্মকর্তারা বলছেন, বিভিন্ন জেলা থেকে প্রার্থীরা নানা অভিযোগ নিয়ে আসছেন। সবগুলো অভিযোগ একত্রিত করে এনটিআরসিএ’র শিক্ষাতত্ব ও শিক্ষামান শাখার একজন সহকারী পরিচালকের কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে আবেদনগুলো এখনই যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করতে চায় না এনটিআরসিএ। একটি নির্দিষ্ট সময় পর আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপর যাদের অভিযোগ সঠিক, তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর ৬৮ হাজার ৩৯০ জন শিক্ষক নিয়োগের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এর মধ্যে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ৩১ হাজার ৫০৮ জন এবং মাদরাসা, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি স্কুল-কলেজে ৩৬ হাজার ৮৮২ জন নিয়োগ দেওয়ার কথা জানানো। গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে আবেদন শুরু হয়ে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে। এক লাখের বেশি চাকরি প্রার্থী শিক্ষক হওয়ার আবেদন করেন।
আবেদনকৃতদের তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে ৩২ হাজার ৪৩৮ জন প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশের ফল প্রকাশের পর থেকেই নিবন্ধনধারীরা নানা অভিযোগ জানিয়ে ফল বাতিলের দাবি করেছেন।