বেশি নম্বর পেয়েও সুপারিশ পাননি, সার্টিফেকেট পুড়িয়ে ফেলতে চান তসলিম

এনটিআরসিএ’র লোগো ও তসলিম উদ্দিন
এনটিআরসিএ’র লোগো ও তসলিম উদ্দিন  © সংগৃহীত

শিক্ষক নিবন্ধনের জাতীয় মেধাতালিকায় এগিয়ে রয়েছেন। বিষয়ভিত্তিক নম্বরও বেশি। তবুও চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে কলেজ পর্যায়ে নিয়োগের সুপারিশ পাননি। হতাশায় নিজের অর্জিত সনদ পুড়িয়ে ফেলতে চান তিনি।

বলা হচ্ছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার মো. তসলিম উদ্দিনের কথা। ১১তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আরবি প্রভাষক বিষয়ে নিবন্ধন সনদ অর্জন করেছিলেন তিনি। নিবন্ধন পরীক্ষায় তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৭ দশমিক ৫০। তার নিবন্ধনের রোল নম্বর ৪২৯০২০১২।

জানা গেছে, কৃষক পরিবারের সন্তান তসলিম ছোটবেলা থেকেই ছিলেন কঠোর পরিশ্রমী। কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে পড়ালেখা শেষ করেছেন। টিউশনি করে ছোট ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। ইচ্ছা ছিল কলেজে শিক্ষকতা করবেন। তবে তার সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে তসলিম ৪০টি প্রতিষ্ঠান পছন্দক্রম দিয়েছিলেন। সেখানকার চারটি প্রতিষ্ঠানে তার চেয়ে কম নম্বরধারীদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে জয়পুরহাট সদরের নেঙ্গাপীর হাট ফাযিল মাদ্রাসায় যাকে সুপারিশ করা হয়েছে তার প্রাপ্ত নম্বর ৪২। এছাড়া পাঁচবিবি উপজেলার বাশখুর ফাযিল মাদ্রাসা এবং খেতলাল উপজেলার বেগুনগ্রাম ফাযিল মাদ্রাসায় সুপারিশপ্রাপ্তদের নম্বরও তার চেয়ে কম।

তাসলিম উদ্দিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি টিউশনি করে অনেক কষ্টে পরিবার নিয়ে চলি। এই চাকরিই আমার জীবনের শেষ সম্বল। নিজেকে সমাজের সামনে তুলে ধরার শেষ সুযোগ ছিল। আমি মেধাতালিকা এবং বিষয়ভিত্তিক নম্বরে এগিয়ে থেকেও সুপারিশ পাইনি। অন্যরা আমার চেয়ে পিছিয়ে থেকেও সুপারিশ পেয়েছেন।

কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, এত কষ্টে সনদ অর্জন করে আমার কী লাভ হলো? দীর্ঘ অপেক্ষার পর এবার সুপারিশ পাব ভেবেছিলাম। তবে এনটিআরসিএ’র কারণে আমার সেই আশা আর পূরণ হলো না। যে সার্টিফিকেট আমাকে চাকরিই দিতে পারলো না। সেই সার্টিফিকেট দিয়ে আমি কি করবো? এটি পুড়িয়ে ফেলাই ভালো হবে।

প্রসঙ্গত ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর ৬৮ হাজার ৩৯০ জন শিক্ষক নিয়োগের চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এর মধ্যে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে ৩১ হাজার ৫০৮ জন এবং মাদরাসা, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা ও কারিগরি স্কুল-কলেজে ৩৬ হাজার ৮৮২ জন নিয়োগ দেওয়ার কথা জানানো। গত ২৯ ডিসেম্বর থেকে আবেদন শুরু হয়ে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে। এক লাখের বেশি চাকরি প্রার্থী শিক্ষক হওয়ার আবেদন করেন। 

আবেদনকৃতদের তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে ৩২ হাজার ৪৩৮ জন প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য প্রাথমিকভাবে সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশের ফল প্রকাশের পর থেকেই নিবন্ধনধারীরা নানা অভিযোগ জানিয়ে ফল বাতিলের দাবি করেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ