মেরিটে এগিয়ে থেকেও সুপারিশ পাননি আইসিটি নিবন্ধনধারীরা
মেধাতালিকায় অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থেকেও কোনো কলেজেই চাকরির সুপারিশ পাননি আইসিটি বিষয়ে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা। মেরিটে পিছিয়ে থেকেও সুপারিশ পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিএসই বিষয়ে নিবন্ধন পরীক্ষা দেওয়া প্রার্থীদের বিরুদ্ধে।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) বলছে, যাদের নম্বর বেশি এবং মেধাতালিকায় এগিয়ে রয়েছেন, তারাই চাকরির জন্য সুপারিশ পেয়েছেন। সুপারিশ করা হয়েছে কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে। এখানে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তবে এনটিআরসিএ’র এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন আইসিটি বিষয়ের সনদধারীরা। তাদের দাবি, তারা মেধাক্রমে এগিয়ে থাকলেও ভালো প্রতিষ্ঠানে সুপারিশ পাননি। অনেকে আবার কোনো প্রতিষ্ঠানই পায়নি। অন্যদিকে সিএসই সাবজেক্ট থেকে সনদ পাওয়া ব্যক্তিরা মেধাক্রমে পিছিয়ে থাকলেও তারা ভালো প্রতিষ্ঠান পেয়েছেন। যদিও চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির একটি ধারায় বলা হয়েছে, শূন্যপদ এবং মেধাক্রম অনুযায়ী সুপারিশ করা হবে। তবে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ থাকলেও প্রাথমিক সুপারিশের ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ প্রার্থীদের।
চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির ৭ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘‘প্রার্থীর আবেদনে বর্ণিত Choice এর প্রেক্ষিতে প্রার্থীর মেধাক্রম ও পছন্দক্রম অনুসারে ফলাফল Process করা হবে।’’
এ প্রসঙ্গে ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় আইসিটি বিষয়ের সনদধারী মো. জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, ‘‘আমি ৪র্থ গনবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সময় মাগুরা নাজির আহমেদ কলেজকে ৫ নম্বর পছন্দক্রমে রেখেছিলাম। সেখানে সিএসই বিষয়ে শিক্ষক নিবন্ধন থেকে ৩১৯ মেধাক্রম থেকে সিলেক্ট হয়েছে অথচ আমার আইসিটি বিষয়ে মেধাক্রম ২৬৬। এখানে অবশ্যই আমার সিলেক্ট হওয়ার কথা অথচ আমার থেকে দূরের মেধাক্রমের একজনকে সিলেক্ট করা হলো।’’
১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনে জাতীয় মেধাক্রমে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছেন মো. আলমেহেদী। তিনি বলেন, আমার চয়েজ অর্ডারের ১ম এবং ২য় কলেজে কম্পিউটার সায়েন্সের ১৮৯ ও ৭০ মেধাক্রমকে সুপারিশ করা হয়েছে। অথচ আমি মেধাক্রমে পঞ্চম অবস্থানে থেকেও সুপারিশ পাইনি। অবিলম্বে আইসিটির রেজাল্ট বাতিল করে মেধাক্রমের ভিত্তিতে নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইসিটি বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স করেছেন মো. কবির হোসেন। ১৬তম নিবন্ধন পরীক্ষায় তার মেধাক্রম ২৫২। তিনি জানান, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে কলেজ পর্যায়ে ‘আইসিটিতে’ আইসিটি বিষয়ের প্রার্থীরাই বঞ্চিত। শুধুমাত্র আইসিটি বিষয়ের রেজাল্ট বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে এ প্রহসনের সমাধান চাই।
তিনি আরও বলেন, আমার মেরিট ২৫২, আমার পছন্দের প্রথম ১৪টি কলেজের মধ্যে ১০টি কলেজে নির্বাচিত প্রার্থীই সিএসই বিষয়ের এবং তাদের মেধাতালিকা আমার পেছনে। আমাদের আইসিটি বিষয়কে বঞ্চিত করে এই নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ বৈষম্যের শিকার। এই অন্যায় নিয়োগ বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
প্রার্থীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ’র সচিব মো. ওবায়দুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রার্থীরা আবেদন করেছেন অনলাইনে। তাদের আবেদন যাচাই-বাছাই করা হয়েছে কম্পিউটারের মাধ্যমে। এটি অটোমেটিক প্রক্রিয়া। এখানে কিছু ভুল হতেই পারে।
যারা মেধাতালিকায় এগিয়ে থেকেও নিয়োগের সুপারিশ পাননি তাদের লিখিত আবেদনের কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, যাদের এমন সমস্যা হয়েছে তারা সকল তথ্য প্রমাণসহ আমাদের কাছে লিখিত আবেদন দিক। আমরা তাদের আবেদনগুলো পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।