চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি: ইনডেক্স বাদ দিয়ে আবেদনের সুযোগ থাকছে

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ  © ফাইল ছবি

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তুতি শুরু করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। তবে এই গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা আবেদনের সুযোগ পাবেন না। তবে ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা তাদের ইনডেক্স ডিলেট করতে পারলে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন। তবে কেউ যদি ইনডেক্স রেখে আবেদন করেন তাহলে তার আবেদনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

এনটিআরসিএ বলছে, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদ পূরণের কারণেই মূলত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের আবেদনের সুযোগ বন্ধ করা হয়েছে। তবে কোনো শিক্ষক চাইলে তাদের ইনডেক্স বাতিল করে আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া কেউ যদি ১৪ অথবা ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনের সনদ দিয়ে স্কুলে চাকরিরত থাকেন, তিনি ১৬তম নিবন্ধন দিয়ে কলেজ পর্যায়ে আবেদন করতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ সচিব মো. ওবায়দুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা আবেদন করতে পারবেন না। তবে কোনো শিক্ষক চাইলে তাদের ইনডেক্স বাতিল করে আবেদন করতে পারবেন। ইনডেক্সধারীদের আবেদনের ক্ষেত্রে তাদের ইনডেক্স ডিলেট হয়েছে কিনা সেটি নিশ্চিত হতে হবে।

এর কারণ হিসেবে এনটিআরসিএ সচিব বলেন, আমরা তিনটি অধিদপ্তর থেকে ইনডেক্সধারীদের তথ্য সংগ্রহ করেছি। কাজেই কেউ যদি ইনডেক্স ডিলেট না হলেও আবেদন করেন তাহলে তিনি ধরা পড়ে যাবেন। তার আবেদনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

কেউ ১৪তম অথবা ১৫তম নিবন্ধনের সনদ দিয়ে স্কুলে ইনডেক্স পেল, তিনি ১৬তম নিবন্ধনে কলেজ পর্যায়ে সনদ অর্জন করেছেন। তিনি কি চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এনটিআরসিএ সচিব মো. ওবায়দুর রহমান জানান, কেউ স্কুলে ইনডেক্স পেলে তিনি ১৬তম সনদ দিয়ে কলেজ পর্যায়ে আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।

এদিকে হঠাৎ করে ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ বন্ধ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে অনেক ভালো নাম্বার পেয়েও তারা বাড়ি থেকে অনেক দূরের প্রতিষ্ঠানে সুপারিশ পেয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে তারা যোগদান করেছেন কেবলমাত্র চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন সেই আশায়। তবে তাদের বাড়ির কাছের প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সব পথ বন্ধ করা হয়েছে। এটি অন্যায়।

শিক্ষকরা অভিযোগ করে বলেন, ৭০ হাজার শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। এতে করে যারা নিবন্ধন পরীক্ষায় ৪০ পেয়েছেন তারাও চাকরি পাবেন। অথচ ইনডেক্সধারীদের অনেকে ৮০/৮৫ নম্বর পেয়েও নিজ বাড়ির কাছে যেতে পারবেন না।

মো. পরিতোষ নামে এক শিক্ষক জানান, আমি বাড়ি থেকে ৫৫০ কিলোমিটার দূরের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছি। নিজ বাড়ি থেকে এতদূরের প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছি কেবলমাত্র চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবো সেই আশায়। তবে আমার সেই আশা আর পূরণ হবে না। আমাদের বদলীর ব্যবস্থা নেই। আবেদনের সুযোগও বন্ধ করা হলো। আমরা এখন কোথায় যাব। স্কুলে বেতন মাত্র সাড়ে ১২ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে নিজে চলবো কীভাবে আর বাড়িতে টাকা পাঠাব কীভাবে সেটিই বুঝতে পারছি না।

এসব বিষয়ে জানতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীককে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 


সর্বশেষ সংবাদ