তিন বছর ধরে অলস অবস্থায় ৪১ কোটি টাকা
১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের ফি বাবদ আয় করা ৪১ কোটি টাকা বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কোষাগারে অলস পড়ে আছে। পরীক্ষা আয়োজন করতে না পারায় এই অর্থ ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।
এনটিআরসিএ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে আবেদন করেন ১১ লাখ ৭২ হাজার ২৮৬ জন। স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার প্রতিটি আবেদনের জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে ৩৫০ টাকা করে ফি নেওয়া হয়। সে হিসেবে আবেদন ফি থেকে এনটিআরসিএ’র আয় হয়েছে ৪১ কোটি ৩ লাখ টাকা।
আবেদন গ্রহণ করা হলেও পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনো কাজেই হাত দেয়নি এনটিআরসিএ। ফলে তিন বছর ধরে এই অর্থ অলস অবস্থায় রয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, রুম বরাদ্দ থেকে শুরু করে প্রশ্নপত্র ছাপার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে। এছাড়া শিগগিরই পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ সদস্য (অর্থ ও প্রশাসন) এ এস এম জাকির হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘‘আপনি অফিস সময়ে ফোন দেবেন। এছাড়া আমরা আপনাদের তথ্য দিতে পিআরও শাখা চালু করতে যাচ্ছি। তারাই আপনাদের তথ্য সরবরাহ করবে।’’অলস অবস্থায় অর্থ থাকার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে প্রায় তিন বছর হতে চললেও এখনো ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজন করতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। যারা এই নিবন্ধনে আবেদন করেছিলেন তাদের অনেকেরই বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম হয়ে গেছে। অনেকের বয়স ৩৫ বছরের কাছাকাছি। এই অবস্থায় দ্রুত পরীক্ষা না নেওয়া হলে অনেকেরই শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে।
চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন সবকিছু থমকে ছিল। করোনার প্রভাব কেটে যাওয়ার পর প্রাথমিক থেকে শুরু করে বড় বড় চাকরির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের পরীক্ষা হচ্ছে না। পরীক্ষা আয়োজন করতে না পারলে তাদের কাছ থেকে নেওয়া আবেদনের অর্থ ফেরত দেওয়া হোক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৭তম নিবন্ধন পরীক্ষায় আবেদন করা এক প্রার্থী বলেন, দীর্ঘ ৩ বছর ধরে পরীক্ষার অপেক্ষা করছি। আর অপেক্ষা সহ্য হচ্ছে না। গত জুন মাসে আমার বয়স ৩৫ বছর হয়ে গেছে। এই অবস্থায় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও চাকরি হবে না। তাই আমি আমার আবেদনের টাকা ফেরত চাই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন ফোরামের সভাপতি জাভেদ মোশাররফ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এনটিআরসিএ আমাদের একাধিকবার আশ্বাস দিয়েছে। তবে কোনো বারই তারা তাদের কথা রাখতে পারেনি। আমরা এনটিআরসিএ’র অফিসে যেতে যেতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। আমাদের অনেকেরই বয়স শেষ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় অনেকেই হতাশায় আবেদনের টাকা ফেরত চাইতে পারেন।
সার্বিক বিষেয়ে জানতে এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খানকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।