বাংলাদেশ ব্যাংকে বাবা-ছেলের প্রথম অফিস

চাকরি
বাবা-ছেলের একসঙ্গে অফিসের প্রথম দিন

বাবা হচ্ছে সন্তানের কাছে আয়নার মতো, যেখানে প্রতিফলিত হয় তার আদর্শ, বিবেক ও ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি। ছোটবেলা থেকেই একটি সন্তানের চোখে বাবা যে রঙিন স্বপ্নের পৃথিবী এঁকে দেন, তার বাস্তবায়নেই বাবাদের জীবনে শত চেষ্টা। বাবা মোহাম্মদ গোলাম ফারুক বাংলাদেশ ব্যাংকের অতিরিক্ত পরিচালক। ছেলে মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী সহকারী পরিচালক (জেনারেল) পদে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান করেছেন। গত বৃহস্পতিবার ছিল বাবা-ছেলের একসঙ্গে অফিসের প্রথম দিন।

বাংলাদেশ ব্যাংকে তোলা বাবা-ছেলের একসঙ্গে অফিস করার ছবিটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বাবার হাত ধরে ছেলে একসময় প্রতিদিন স্কুলে যেতেন, এখন বাবা-ছেলে একসঙ্গে একই রিকশায় অফিসে যাবেন।

মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘সকালে যখন বাবার সঙ্গে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হই, তখন অন্য রকম একটা ভালো লাগা কাজ করছিল। রিকশায় যেতে যেতে মাথায় এসেছিল বাবার সঙ্গে একটা ছবি তুলে রাখব। বাংলাদেশ ব্যাংকে নেমেই বাবাকে একসঙ্গে ছবি তোলার কথা বলি।’

গোলাম রাব্বানী আরও বলেন, ‘এরপর ছবিটা আমার ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করি। কমেন্ট বক্সে এবং অনেকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানান। বাবা ছবিটা বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের গ্রুপে পোস্ট করেন। ছবির ক্যাপশনে লিখেছিলেন, “বাবা-ছেলের একসাথে অফিসের প্রথম দিন।’ মূলত সেখান থেকে ছবিটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজে ছড়িয়ে পড়ে।’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিষয়ে স্নাতক শেষে বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে এমবিএ করছেন গোলাম রাব্বানী। এ ছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেটা সায়েন্সে স্নাতকোত্তর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেছেন। বুয়েটে স্নাতকের শেষ বর্ষে পড়া অবস্থায় সরকারি চাকরি করবেন বলে মনস্থির করেন রাব্বানী।

আরও পড়ুন: দেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা: টিআইবি

রাব্বানী বলেন, ‘বুয়েটের শেষ বর্ষে সিদ্ধান্ত নিলাম, বিদেশে না গিয়ে দেশেই মা–বাবার সঙ্গে থাকব। তাই সরকারি চাকরির প্রস্তুতি শুরু করি। বাবা যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করতেন, তাই একটা স্বপ্নও ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করার। এ ছাড়া সহকারী পরিচালক পদের বেতন ও সুযোগ-সুবিধা অনেক ভালো।’

মোহাম্মদ গোলাম ফারুক বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাকরি করে সৎ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে জীবনযাপন করার পন্থাটাই আমার ছেলেকে এ চাকরিতে আসতে আকৃষ্ট করেছে। সঙ্গে তার চেষ্টাও ছিল। বাবা-ছেলের একসঙ্গে অফিসে যাওয়ার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। চাকরিরত অবস্থায় আমার সঙ্গে আমার সন্তান একই অফিসে যাচ্ছে, এর চেয়ে ভালো লাগার আর কিছু হতে পারে না।’