মাদ্রাসা শিক্ষকের বেত্রাঘাত, বাথরুমে মিলল ছাত্রের লাশ

মাদ্রাসা ছাত্র
মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যু

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে মাদ্রাসা শিক্ষকের পিটুনিতে ১২ বছর বয়সী ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ।

জেলা শহরের কাউতলীর ইব্রাহিমীয়া হাফিজিয়া কোরআন মাদ্রাসা থেকে রবিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে মোহাম্মদ আলী নামে ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি ঘটনার সততা নিশ্চিত করেছেন।

নিহত কিশোরের আলীর বাড়ি কাউতলীতেই। তার বাবা কাউসার মিয়া জানান, আড়াই বছর আগে এই মাদ্রাসায় তাকে ভর্তি করা হয়।

তিনি স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলেন, রবিবার সকালে আলীকে মাদ্রাসায় দিয়ে যান তার বাবা। দুপুরে ছেলের জন্য খাবার নিয়ে এলে তার মরদেহ দেখতে পান মেঝেতে। বাবার চিৎকারে এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে পুলিশে খবর দেন।

আরও পড়ুন: অভাব দমাতে পারেনি বাশারকে, ঢাবি-রাবির পর চান্স পেলেন বুয়েটেও

মোহাম্মদ আলীর চাচা মোস্তাক অভিযোগ করেন, শিক্ষক হোসাইন আহমেদের পিটুনির কারণে তার ভাতিজার মৃত্যু হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আলী হেফজখানায় পড়ছিল। কোরআন শরিফের অর্ধেক সে মুখস্থ করে ফেলেছিল। প্রতিদিনকার মতো আজও আলীর বাবা তাকে সকালে মাদ্রাসায় দিয়ে যায়। পড়া না পারায় তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাকে হত্যা করে বাথরুমে আটকে রাখে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক হোসাইন বলেন, ‘আলী কোরআন শরিফের ২৬ পাড়া মুখস্থ করে ফেলেছিল...। কিছুদিন ধরে সে আধা পৃষ্ঠা পড়াও ঠিকভাবে দিতে পারছিল না। আজ সকালেও ঠিক এমনই হয়েছে। পড়া দিতে না পারায় তার হাতে ও পায়ের ঊরুতে দুইবার বেত্রাঘাত করি। পরে দুপুরে নামাজ শেষে সে বাথরুমে যায়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ বাথরুম থেকে বের না হলে দেয়ালের ফাঁক দিয়ে অন্য এক ছাত্র উঁকি দিয়ে দেখে সে গলায় ফাঁস দিয়ে পড়ে আছে। তাকে বাথরুম থেকে বের করি। এরই মধ্যে তার বাবা মাদ্রাসায় এসে ছেলের লাশ দেখতে পায়।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহিন বলেন, ‘এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক হোসাইন আহমেদ বেত্রাঘাতের কথা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। প্রাথমিক অবস্থায় এটি আত্মহত্যা মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের পর আসল কারণ জানা যাবে।’