বাবার হত্যাকারীদের শাস্তি দিতে এরশাদের সংগ্রাম সিনেমাকেও হার মানাল

আইন
হোছাইন মোহাম্মদ এরশাদ

হোছাইন মোহাম্মদ এরশাদ যখন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন, তখন বাবা নুরুল কবির খুন হন। বাবার মৃত্যুর পর  নিত্য অভাব-অনটন পড়ে পরিবার।সেই সময়  মামলা চালানো দূরে থাক, পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল এরশাদের। তবে পড়ালেখা  অব্যাহত রাখেন তিনি। বাবার খুনিদের নিজে শাস্তি নিশ্চিত করতে আইন বিভাগের ডিগ্রি নেন। 

বহুল প্রচেষ্টার ফল অবশেষে পেয়েছেন হোছাইন মোহাম্মদ এরশাদ। প্রায় ২২ বছর পর সোমবার হত্যা মামলার রায় হয়েছে। চার আসামিকে যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত। সে মামলায় আইনজীবী হিসেবে এরশাদ নিজেই লড়েছেন। আসামিদের শাস্তি হওয়ায় উৎফুল্ল তিনি। তার মা খালেদা ইয়াসমিনসহ খুশি পরিবারের অন্য সদস্যরা।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৯ সালের ৬ ডিসেম্বর সকালে লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর রুস্তমের পাড়ার আজলা পুকুরের পাড়ে নুরুল কবিরকে (৪৫) হত্যা করা হয়। আপন বড় ভাই ও তিন ভাতিজার হাতে খুন হয়েছিলেন সৌদিপ্রবাসী নুরুল কবির। মৃত্যুর সময় রেখে গিয়েছিলেন স্ত্রী, পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে।

নিহত ঘটনায় নুরুল কবিরের স্ত্রী খালেদা ইয়াসমিন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ২০০০ সালের ২১ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অভিযোগ গঠন হয় ২০০৩ সালের ১৩ জানুয়ারি। মামলায় ১৭ জন সাক্ষী ও ৩ জন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে সোমবার রায় দেওয়া হয়। রায়ে নুরুল ইসলাম এবং তাঁর তিন ছেলে ওসমান গণি, সরোয়ার কামাল ও আব্বাস উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

আরও পড়ুন:  পুলিশকে আধুনিক করে সক্ষমতা বাড়াতে চাই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বাবা হত্যার কারণ প্রসঙ্গে এরশাদ বলেন, ‘সৌদি আরবে থাকার সময় তাঁর চাচাতো ভাইকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন বাবা। কিন্তু সে টাকা ফেরত দিতে তালবাহানা শুরু করেছিলেন চাচা ও তাঁর ছেলেরা। একসময় বিদেশ থেকে চলে আসেন বাবা। টাকা পরিশোধ নিয়ে সালিস-বৈঠক হয়েছিল। টাকা পরিশোধ না করে উল্টো বাবাকে খুন করেন তাঁরা।

এরশাদ জানান, বাবার মৃত্যুর পর পারিবারিক অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, বড় ভাই মো. আইয়ুব এলাকায় একটি মুদিদোকান দেন। অন্য তিন ভাই বিদেশ চলে যান। বড় ভাইও পরে বিদেশে যান। সেসময় পরিবারের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। নিজের জন্য একবার কাতারের ভিসা এলেও পড়াশোনার দেশেই জন্য রয়ে যান তিনি। 

তিনি আরও বলেন, বাবার খুনীদের নিজে শাস্তি দিতে পেরে আমি ও আমার পরিবার ভীষণ খুশি।