সব জিনিসের দাম বাড়তি, কষ্টে আছে আমজনতা

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি

সাধারণ মানুষের জন্য আপদ হয়ে এসেছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি।দেশের বাজারে চালের দামের সঙ্গে কয়েকগুণ মূল্য বেড়েছে প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের। এখন আর মানুষের আয় ও ব্যয়ের সমন্বয় হচ্ছে না। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি মধ্যবিত্তের বোবাকান্নায় পরিণত হয়েছে। সব জিনিসের দাম বাড়তি, কষ্টে বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষ।

সংবাদ মাধ্যমকে এক সাক্ষাৎকারে মোশাররফ হোসেন (৫৫) নামে একজন বলেন, ঢাকার একটি বেসরকারি কোম্পানিতে ছোট পদে আমি চাকরি করি। থাকেন মগবাজারের কাছে দিলু রোডে, ভাড়া বাসায়। একার আয়ে সংসার চলে না, তাই তাঁর স্ত্রী বাসায় ছোট কয়েকজন ছেলেমেয়েকে পড়ান। একমাত্র মেয়ে ইস্পাহানি স্কুলে পড়ে। বৃদ্ধা মা আছেন বাসায়। স্বামী-স্ত্রী মিলে আয় করেন ৪৫ হাজার টাকা।

দিলু রোডের এক মুদিদোকানে গতকাল সোমবার সকালে চাল, ডাল, লবণ, সয়াবিন তেল, মসলা, তরল দুধ ইত্যাদি কিনছিলেন মোশাররফ হোসেন। প্রথম আলোর প্রতিবেদক পরিচয় দিয়ে জিনিসপত্রের দাম কেমন—জানতে চাইলে বলেন, এমন কোনো জিনিস নেই, যার দাম বাড়েনি।

আরও পড়ুন: ৬২ বছর বয়সে মাস্টার্স, সংগ্রামী নারীর গল্প

তিনি আরও বলেন, বাসা থেকে অফিসের দূরত্ব আধা কিলোমিটার। পথটুকু একসময় রিকশায় আসতেন। এখন আর সেই বিলাসিতা করেন না। কীভাবে সামলাচ্ছেন সব—এমন প্রশ্ন করতেই একটা হিসাব দেন মোশাররফ। জানান, যাতায়াতের ভাড়া বাঁচাতে বাসাটা নিই অফিসের কাছে।

বাসাভাড়া ১৮ হাজার, বিদ্যুৎ বিল ও গ্যাস বিল আড়াই হাজার, চাল, ডালসহ মাসিক শুকনা বাজার ১০ হাজার, কাঁচাবাজার চার হাজার, মায়ের ওষুধ তিন হাজার, মেয়ের স্কুলের বেতন ও বই-খাতা মিলিয়ে ছয় হাজার টাকা খরচ হয়। সব মিলিয়ে খরচ ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা। সামাজিকতা করার জন্য আর কিছু থাকে না। বিয়ের অনুষ্ঠানে কেউ দাওয়াত দিলে এড়িয়ে যাই।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, সংসার আর চলছেই না। যে বেতনে চাকরি করেন তাতে ১৫ দিনের বাজার খরচ হয় না। শহীদুল্লাহ নামের একজন জানালেন, বাসভাড়া থেকে শুরু করে প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। বেতন বাড়েনি, আয় বাড়েনি; অথচ খরচ বেড়েছে।