কেন প্রকাশ্যে নিজের জীবন শেষ করতে চায় মানুষ?
- ৩০ নভেম্বর -০০০১, ০০:০০
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল এন্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহজাবীন হক বলেন, যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে আত্মহত্যা করতে চাচ্ছেন সেই ব্যক্তি যে মরে যেতে চাচ্ছেন সেটা শতভাগ নিশ্চিত।
প্রকাশ্যে আত্মহত্যাকারী মানুষদের সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি সমাজের উপর ক্ষিপ্ত থাকতে পারেন, রাষ্ট্রের উপর ক্ষিপ্ত থাকেন পারেন। যেটার তিনি মোকাবেলা করতে পারেননি। মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক যে প্রবণতা থাকে যে মানুষ আমার কথা শুনবে, আমাকে মূল্য দিবে, আমার দিকে তাকাবে এই ব্যাপার গুলোর ঘাটতি- যে ব্যক্তি আত্মহত্যা করেন তিনি অনুভব করেন।’’
‘‘তখন তিনি এমন একটা কাজ করে যেতে চান, যাতে করে সবার মনোযোগ পেতে পারেন। সবাই যাতে তাকে মূল্য দিতে বাধ্য হয়। ঘরের ভিতর আত্মহত্যা করলে সেটা হয়ত কেউ জানলো, কেউ জানলো না, তারপর মানুষ ভুলে গেল।’’
‘কিন্তু প্রকাশ্যে যখন ঘটনা ঘটছে তখন কিন্তু বুঝতে হবে তিনি শুধু মরেই যেতে চাচ্ছেন না, মরে যাওয়ার সাথে সাথে অন্য কারো উপর রাগ, আক্রোশ প্রকাশ করে যাচ্ছেন। কারণ তিনি জানেন এভাবে কাজটা করলে তিনি পত্রিকার শিরোনাম হবেন, টিভিতে খবর হবে। অনেক সময় অন্যকে শিক্ষা দেয়ার জন্য এই পদ্ধতি এরা বেছে নেন।’’
দেশে মানসিক সহায়তা বিষয়ক হেল্পলাইন 'কান পেতে রই' সংস্থার এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত তাদের হেল্পলাইনে ফোন করে কাউন্সেলিং চেয়েছেন প্রায় ১৩ হাজার মানুষ। তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যাই বেশি। এই পুরুষদের মধ্যে ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সীরা সবচেয়ে বেশি কল করেছেন।
সংস্থাটির সমন্বয়ক অরুণ দাস বলেন, বেশিরভাগই তাদের মানসিক কষ্টের উৎস হিসেবে উপার্জনের চাপের কথা উল্লেখ করেন।
"তাদের একটা বড় অংশ সম্পর্ক নিয়ে সমস্যার কথা বলেন এবং মূলত মেয়েরাই এবিষয় নিয়ে বেশি কথা বলেন। পুরুষদের ক্ষেত্রে কাজ বিষয়ক ইস্যু বেশি পাওয়া যায়- কারো হয়ত চাকরি চলে গেছে, অর্থনৈতিক অসুবিধার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, যে কারণে মানসিক চাপ- এসব বিষয় নিয়ে পুরুষরা কল বলেন বেশি। আর একটা বিষয়ে পুরুষদের কাছ থেকে আমরা কল পাই সেটা হচ্ছে অ্যাডিকশন।"
সূত্র: বিবিসি বাংলা