শিক্ষকের পিটুনিতে আইসিইউতে দুই ছাত্রী

হাজী নূর উদ্দিন আহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জসিম উদ্দিন নামে এক শিক্ষক স্কুলের ভেতরে চুমকি নিয়ে খেলা করায় তানজিলা আক্তার (১৪) ও নিশী চৌধুরী (১৪) নামে সপ্তম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে দুই শিক্ষার্থী একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে।

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয় এক শিক্ষার্থীর স্বজন।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শিক্ষার্থী তানজিলার মা মিনু বেগম ও নিশীর মা বিউটি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, উপজেলার তারাব পৌরসভার বরপা এলাকার হাজী নুরুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জসিম মাস্টার এক উগ্র প্রকৃতির মানুষ। তিনি প্রায় সময় শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারধর করে থাকেন। দুই-এক দিনের মধ্যেই স্কুল ঈদের জন্য বন্ধ দেওয়ার কথা। স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার খুশিতে শনিবার দুপুরে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিলা ও নিশীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী চুমকি দিয়ে খেলা করছিল। চুমকি নিয়ে খেলার বিষয়টি শিক্ষক জসিম উদ্দিন দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে তানজিলা ও নিশী আক্তারকে অফিস কক্ষে ডেকে পাঠান। এসময় জসিম উদ্দিন লাঠি দিয়ে দুজনকে বেধড়কভাবে পেটাতে থাকেন। এসময় জসিম উদ্দিন দুই শিক্ষার্থীকে লাথি ও চুলের মুঠি ধরে অমানুষিক নির্যাতন চালান।এরপর অন্য শিক্ষকরা তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ৮ তরুণ পেলেন ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড

এক ছাত্রীর মামা শফিক মিয়া বলেন, আমার বোন পোশাক কারখানায় কাম করে। মেয়েটারে অনেক কষ্ট কইরা পড়ালেকা করাইতাছে। ওর বাপ নাই। মেয়েটারে কখনও মারে না। মেয়েটারে এমনভাবে পিটাইছে যে ওর শরীরে শুধু দাগ আর দাগ। আমাদের এলাকার আরেকটা ছাত্রীরেও মারছে, ওরও একই অবস্থা। ওরা এখন আইসিইউতে। আমরা এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জসিম উদ্দিনকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

কথা হয়েছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জরহর লাল ঘোষের সঙ্গে। তার রুমে নিয়ে মারধরের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।জরহর বলেন, স্কুল ছুটি শুনে ছেলেমেয়েরা বারান্দায় জরি মাখামাখি করছিল। তখন জসিম স্যার গিয়ে তাদের বেতের বাড়ি দেন। আমি সে সময় আমার রুমে ছিলাম। বিষয়টি দেখতে পেয়ে ছুটে গিয়ে তাকে বাধা দেই।

‘এরপর ছাত্রীদের মাথায় পানি ঢালা হয়। একজন অসুস্থ বোধ করলে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে আরেকজনকেও নেয়া হয়। সন্ধ্যায় আমরা তাদের দেখে এসেছি। বিষয়টি শিক্ষা অফিসারও জানেন।’

ওসি সায়েদ জানান, অভিযোগ পেয়ে তারা বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছেন।

এ ঘটনায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে রোববার জরুরি মিটিং ডাকা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ্ নুসরাত জাহান।