ফেসবুক থেকে প্রায় ২ কোটির চাকরির অফার, এসেছে গুগল-আমাজন থেকেও

চাকরি
বিশাখ মণ্ডল

ফেসবুক থেকে বছরে প্রায় ২ কোটি টাকার চাকরির অফার পেলেন ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিশাখ মণ্ডল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই ছাত্র জানালেন, তার অফার এসেছে গুগল-আমাজন থেকেও। জানা গেছে, চাষবাস করেন বাবা, মা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের রামপুরহাটে, থাকেন যাদবপুরে ভাড়া বাড়িতে। 

বিশাখকে নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১০ জন এবার বার্ষিক এক কোটি টাকার বেশি প্যাকেজের চাকরি পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য স্যমন্তক দাস বলেন, যাদবপুরে পড়ে ওরা এমন সফল হয়েছে। পড়ুয়াদের এমন সাফল্যে আমরা আপ্লুত। তিনি চান, এই সব পড়ুয়া যেন নিজের মতো করে যাদবপুরকে কিছু ফিরিয়ে দেন।

বিশাখ জানায়, আমি এখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র। জাস্ট গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট হচ্ছে। আমার হাতে এই মুহূর্তে তিন তিনটে ন্যাশনাল অফার। একটা ফেসবুক লন্ডন এবং অপরটা গুগল লন্ডন থেকে। পাশাপাশি অ্যাআমাজনের ইন্টার্নশিপ, যেটা ফুলটাইমে কনভার্ট হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, ফেসবুক লন্ডন দিচ্ছে ১ কোটি ৮৩ লাখ। গুগল লন্ডন দিচ্ছে ১ কোটি ৪০ লাখ। আমাজনের হলে ওটা ১ কোটি ১৩ লাখ। গুগল এবং ফেসবুকের সঙ্গে নেগোশিয়েশন চলছে আপাতত। সোমবারের মধ্যে জানা যাবে। বাড়িতে আমি রামপুরহাটে মায়ের সঙ্গে থাকি। বাবা থাকেন মুর্শিদাবাদে। সেখানেই চাষ করেন। আর এখানে যখন থাকি, যাদবপুরের পিজিতে থাকি' বলেই জানালেন যাদবপুরের কৃতি ছাত্র বিশাখ। 

এত বড় চাকরি পেয়ে খুবই ভাল লাগছে বলে জানালেন বিশাখ। তার কথায়, তবে এত বড় চাকরি পাব কথনও ভাবিনি। কিন্তু বড় কোম্পানির চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করতাম।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কৃতি ছাত্র বিশাখের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত। তার কথায়, আমি ভীষণই খুশি। যাদবপুরে এটা প্রথমবার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর ব্র্যান্ড আবার নিজেকে প্রমাণ করে দিল। খুব ভাল ফ্যাকাল্টি, অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং অবশ্যই ছাত্রের মেধা, এই তিনটেরই সম্মিলিত ফল এল এবার। আশা করছি, সোমবার এটা ২ কোটির থেকে অনেকটাই উপরে যাবে। কারণ ইতিমধ্যেই গুগল লন্ডনের সঙ্গে কথা হয়েছে।  

কারণ তারা জেনে গেছে, বিশাখ ফেসবুকের অফার পেয়েছে। ফেসবুকও জানে ও গুগল পেয়ে গিয়েছে। ফেসবুক বলেছে, গুগল যা স্যালারি বাড়ায়, ওরা তার থেকেও বেশি বাড়িয়ে দেবে। স্বাভাবিকভাবেই বিশাখের সাফল্যে গর্বিত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশাখের বয়স যখন সবে তিন, মা-ছেলের সংসার টানতে শিবানীদেবী চাকরি নেন অঙ্গনওয়াড়িতে। শুরুতে ভাড়ার ঘরে থাকতেন, পরে আত্মীয়-পরিজনের সহযোগিতায় ছোট ফ্ল্যাটে উঠে যান তারা। 

ছেলে ফেসবুকে এমন চাকরি পেয়েছেন শুনে মা খুব খুশি। শিবানীদেবী বলেন, ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর সামান্য বেতনে কুলোতে পারতাম না। বাপের বাড়ির সাহায্য ছাড়া এই জায়গায় পৌঁছনো মুশকিল ছিল।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা ও এবিপি আনন্দ