ছেলের প্রেমিকাকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন আ.লীগ নেতা

মাহমুদা আক্তার প্রিয়া
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাহমুদা আক্তার প্রিয়া

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়িতে নিলেও স্ত্রীর মর্যাদা পাননি মাহমুদা আক্তার প্রিয়া (২১) নামে এক কলেজছাত্রী। উল্টো প্রেমিকের বাবা শেখ ওহিদুজ্জামান মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন তাকে। আহত অবস্থায় ওই ছাত্রীকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার রাতে সদর উপজেলার এড়েন্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওহিদুজ্জামান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মুলঘর ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা। তিনি অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

মাহমুদা আক্তার জানান, রাজবাড়ীতে মামার বাড়িতে আসা-যাওয়ার সুবাদে ওয়াহিদুজ্জামানের ছেলে হিমেলের সঙ্গে পাঁচ বছর আগে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত সোমবার দুপুরে হিমেল তাকে বিয়ে করবে বলে বাড়ির সামনে থেকে প্রাইভেটকারে ফরিদপুর নিয়ে আসেন। সঙ্গে ছোট বোনও আসে। এরপর খাওয়া দাওয়া করে বিকেলে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন।

প্রিয়া আরও জানান, এর আগে হিমেল দুই হাজার টাকা পাঠিয়ে বিয়ের শাড়ি কিনতে বলেন। তিনি বিয়ের শাড়ি কেনেন এবং সঙ্গে আসার আগে সেটি পরেও আসেন। বাড়িতে আসার পর হিমেল দুই বোনকে রেখে পালিয়ে যান। এরপর হিমেলের বাবা তাদের দুই বোনকে ঘরে নিয়ে যান। পরে তাকে নির্যাতন করে রাতে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। এ ঘটনার পর ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ তাদেরকে থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে বলেন।

এরপর মামাদের সহযোগিতায় থানায় এসে বিস্তারিত জানান। পরে আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রিয়ার ছোট বোন রিয়া জানায়, তার বড় বোনকে যখন মারপিট করা হচ্ছিলো তখন তাকে রক্ষা করতে যায়। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান তাকেও মারধর করেন।

প্রিয়ার মা শাফিয়া বেগম জানান, হিমেল বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কও করেছে। সোমবার হিমেল প্রিয়াকে বিয়ে করবে বলে বাড়িতে নিয়ে আসে। কিন্তু হিমেলের বাবা প্রিয়াকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেন। এই ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।

আরো বলুন: হাড়বিহীন মাথা নিয়ে ছাত্র ভর্তি ঢামেকে, মগজ সাভারে

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ ব্রাদার আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, নাক-মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে প্রিয়ার। ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তাকে।

এই বিষয়ে মোবাইল ফোনে হিমেল গণমাধ্যমকে বলেন, প্রিয়ার সঙ্গে ফেসবুকে কথাবার্তা হতো। এর বাইরে তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। সে আমার ঠিকানা যোগাড় করে বাড়িতে এসে ওঠে। এরপর বিয়ের জন্য চাপ দেয়। যে কারণে বাড়ি থেকে বের হয়ে কালুখালীতে আত্মীয়ের বাড়িতে এসেছি। বাবার মারধরের বিষয়ে হিমেল বলেন, এসব ষড়যন্ত্র। আমাকে ও আমার বাবাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ওয়াহিদুজ্জামান মোবাইল ফোনে  বলেন, এসব মিথ্যা। তার বিরুদ্ধে কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করছে।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি, মামলা হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।