ফ্ল্যাটকে বিষাক্ত ‘গ্যাস চেম্বারে’ পরিণত করে মা ও ২ মেয়ের আত্মহত্যা

আত্মহত্যা
ঘটনাস্থলে ৩ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ

ভারতের দক্ষিণ দিল্লির একটি আবাসিক সোসাইটির ফ্ল্যাটকে বিষাক্ত 'গ্যাস চেম্বারে' পরিণত করে সেখানেই আত্মহত্যা করেছেন ৫০ বছর বয়সী এক নারী ও তার দুই মেয়ে। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি রোববার (২২ মে) এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দিল্লির বসন্ত বিহার পাড়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে মেরুদণ্ড ঠাণ্ডা করার মতো পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন ওই নারী। ওই নারীর নাম মঞ্জু শ্রীবাস্তব এবং তার মেয়ে আশিকা ও অঙ্কু।

ফ্ল্যাটটিকে গ্যাস চেম্বারে পরিণত করতে তারা ফ্ল্যাটের সব দরজা, জানালা এবং ভেন্টিলেটর ফয়েল পেপার দিয়ে বন্ধ করেন। যাতে বিষাক্ত গ্যাস বাইরে না যেতে পারে। তদন্তে জানা গেছে, এ সমস্ত উপাদান অনলাইনে অর্ডার করা হয়েছিল।

স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ যখন ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে তখন একটি বেডরুমে তিনটি লাশ দেখতে পান কর্মকর্তারা। এ সময় তাদের পাশে কয়লার আগুন জ্বলছিল। রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের নবটিও খোলা ছিল। কয়লার আগুনের কারণেই সেখানে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস তৈরি হয় এবং এতেই তিনজনের মৃত্যু হয় বলে পুলিশের ধারণা।

ইংরেজিতে লেখা একটি সুইসাইড নোটে ফ্ল্যাটে প্রবেশকারীদের জন্য স্পষ্ট নির্দেশনাও ছিল। 

নোটে লেখা ছিল, "এই ফ্লাটে প্রাণঘাতী গ্যাস কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস ছড়িয়ে আছে। এটি দাহ্য। অনুগ্রহ করে জানালা খুলে এবং ফ্যান চালু করে ঘরে বাতাস চলাচল স্বাভাবিক করুন। ম্যাচ, মোমবাতি বা অন্য কিছুর জ্বালাবেন না!! পর্দা সরানোর সময় সতর্ক থাকুন কারণ ঘরটি ঝুঁকিপূর্ণ। শ্বাস নেবেন না।" 

প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছে, ওই নারীর স্বামী উমেশ চন্দ্র শ্রীবাস্তব গত বছর কোভিড-এ মারা যান এবং তারপর থেকে পরিবারটি বিরক্ত ছিল। ওই নারীও অসুস্থ ছিলেন এবং তারা অসামাজিক জীবনযাপন করছিলেন। 

ওই আবাসিক সোসাইটির সভাপতি এম ডেভিড সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেছেন, পরিবারটি বাড়িটিকে একটি "ধোঁয়ার চেম্বারে" পরিণত করেছে। তবে তারা কেন এমনটি করলেন সে বিষয়ে প্রতিবেশীরা নিশ্চিত নন।

দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। যথাযথ তদন্তের আগে বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয়।