প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তর সরবরাহের মামলায় দম্পতির স্বীকারোক্তি

ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহকারী চক্রের সদস্যরা
ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহকারী চক্রের সদস্যরা © ফাইল ছবি

রাজবাড়ীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহকারী চক্রের ১৩ জনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এক দম্পতি। তারা হলেন রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের মনসুর মণ্ডল ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগম।

শনিবার (২১ মে) সন্ধ্যায় তারা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুধাংশ শেখর রায়ের আদালতে এ জবানবন্দি দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস। এর আগে এ ঘটনায় শুক্রবার (২০ মে) রাত সাড়ে ১২টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক জাহাঙ্গীর মাতুব্বর বাদী হয়ে মামলা করেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের (ইউআরসি) প্রশিক্ষক মাঈনুল ইসলাম হাওলাদার, রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার খামারবাড়ি গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন, ছোট কলকলিয়া গ্রামের সাগর আহমেদ, শিকজান গ্রামের বিজয় বালা, সংগ্রামপুর গ্রামের রেজাউল করিম, চরনারায়ণপুর গ্রামের আবু ছালমান, কালিকাপুর গ্রামের মনসুর মণ্ডল ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগম, মালিয়াট গ্রামের রুমান হাসান, রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার রুবেল মাহমুদ, রাজবাড়ী সদর উপজেলার দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রামের মিজানুর রহমান, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার তালগাছিয়া গ্রামের হারুন সরদার ও আওড়াবাড়িয়া গ্রামের মাঈনুল ইসলাম। রুবেল মাহমুদ শরীয়তপুর কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা এবং নুরুল ইসলাম, রুমান হাসান, মিজানুর রহমান, হারুন সরদার ও ইব্রাহিম শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালে শহরের দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রামের মিজানুরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২০টি মুঠোফোন, ২টি মাস্টারকার্ডসদৃশ ডিভাইস (সিমসহ), ২টি হেডফোন, আড়িপাতা ডিভাইসের ৬টি ছোট ব্যাটারি, পুরোনো ১টি মডেম, ১০ হাজার টাকা, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের হাতে লেখা উত্তর, পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের ফটোকপি, বিভিন্ন গাইড বই, সোনালী ব্যাংকের ১টি ভিসা ডেবিট কার্ড, ইউনিয়ন ব্যাংক লিমিটেডের ১টি ডেবিট কার্ড এবং ২টি স্যামসাং পাওয়ার ব্যাংক উদ্ধার করা হয়।

ওসি প্রাণবন্ধু চন্দ্র দাস বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর শনিবার বিকেলে তাদের রাজবাড়ী আদালতে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার মনসুর মণ্ডল ও তার স্ত্রী ফরিদা বেগমের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেওয়ার এবং অপর ১১ জনের বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। মনসুর-ফরিদা দম্পতি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছেন। এরপর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।