জামিন পেলেন বিয়ের দাবিতে বসা সেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী 

ঢাকা
শিখা আক্তার মৌ

বরগুনায় বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ছাত্রীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৭ মে) দুপুরে ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক কিসলু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক নাহিদ হোসেন এই জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক জানান, সোমবার আদালতে জামিন আবেদন করেছিলাম। বিচারক আবেদনটি গ্রহণ করে বাদী ও বিবাদীর উপস্থিতিতে এই জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে যেসব ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, এর সবই জামিনযোগ্য। আদালতকে বিষয়টি বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। বিকালে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।

এর আগে, বিয়ের দাবিতে জামালপুর থেকে বরগুনার চান্দখালীতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিল রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শিখা আক্তার মৌ। তবে স্বামী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেন তিনি। এ ঘটনায় প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেওয়া ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে বেতাগী থানাকে এ আদেশ দিয়েছেন বরগুনার মুখ্য বিচারিক হাকিম মুহাম্মদ মাহবুব আলম। পরে শুক্রবার (১৩ মে) সকালে বরগুনার বেতাগীর চান্দখালীর কাঠপট্টি এলাকার প্রেমিক মাহমুদুল হাসানের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

জানা গেছে, গত ২৮ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেয় ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী। এ সময় প্রেমিক ও তার পরিবার বাসা থেকে পালিয়ে যায়।

আরও পড়ুন : প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেওয়া সেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী গ্রেপ্তার

শিখা আক্তার মৌ রাজধানীর উত্তরার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও জামালপুরের সড়িষাবাড়ির বাসিন্দা। এছাড়া প্রেমিক মাহমুদুল হাসান উপজেলার চান্দখালীর কাঠপট্টি গ্রামের বাসিন্দা ও রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজিতে (আইইউবিএটি) সিভিল প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী।

সে সময় ওই ছাত্রী জানায়, মাহমুদুল উত্তরায় থাকতেন। পরে তাদের মধ্যে পরিচয় হয়। প্রেমের সম্পর্কের তিন বছর পর মাহমুদুলকে বিয়ের জন্য বলেন তরুণী। মাহমুদুল নানা অজুহাতে তরুণীকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন।

সে আরও জানায়, চলতি মাসে মাহমুদুল গ্রামে চলে আসেন। বাড়িতে এসে তার সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেয় প্রেমিক মাহমুদুল। এরপর চার-পাঁচ দিন ধরে মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে। এজন্য মাহমুদুলের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। তাকে দেখে মাহমুদুল ও তার পরিবার বাসায় তালা লাগিয়ে পালিয়েছে।

ওই ছাত্রী আরও জানায়, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বাধ্য হয়ে এসেছি। ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তিন বছরের সম্পর্ক। নিরুপায় হয়ে এখানে এসেছি। বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা না দিলে আমি এখানেই আত্মহত্যা করব।

এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা তালা ভেঙ্গে তাকে প্রেমিক মাহমুদুলের কক্ষে দিয়ে যায়। সেখানেই বসবাস করছিল ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী। এছাড়া বেতাগী থানা ও উপজেলা প্রশাসন মৌয়ের নিরাপত্তায় জোরদার করে। তবে মাহমুদুলের বাবা মৌয়ের নিকটে আগের স্বামীর সঙ্গে তালাকের কাগজ ও অভিভাবকদের নিয়ে আসার জন্য বলেন। তবে এতে ব্যর্থ হয় মৌ।