যার মা নেই, এ দুনিয়ায় যেন তার কিছুই নেই

মা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনা
মা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ভাবনা

মাকে ভালোবাসার জন্য কোন দিবসের প্রয়োজন হয় না। তবুও নির্দিষ্ট একটি দিনে মায়ের প্রতি প্রতিটি সন্তানের ভালোবাসার আয়োজনের কমতি নেই। প্রকৃত বাস্তবতায় এ মানুষটির প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করলেই ঋণ শোধ হয় না। তাই, তার প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ আমরা বিভিন্ন রূপেই করে থাকি। বিশ্ব মা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থীর দিবসটির ভাবনাগুলো তুলে ধরেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি তানভীর আহম্মেদ

মাকে সবসময়ই ভালোবাসতে হবে

আমাদের ছোট-বড় স্বপ্নপূরণে মা ছায়ার মতো পাশে থাকেন। কখনো কখনো মায়ের অনুপ্রেরণাতেই আমরা স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছাতে পারি। কিন্তু, এত অবদান যার নামের সঙ্গে জড়িয়ে তার প্রতি কখনো কৃতজ্ঞতা জানানো হয় না। সন্তানের প্রতি মায়ের স্নেহ ফাগুনধারা হয়ে আজীবন বহমান থাকলেও চলতি জীবনের যান্ত্রিকতায় আজকালে আমাদের অনেকেই বুঝি না মায়ের মর্ম।

জীবনের একপর্যায়ে মাকে তার যোগ্য সম্মান দিতে ভুলে যাই। মায়ের গভীর মমতার কথা আর তার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য মনে করিয়ে দিতেই প্রতিবছর আসে মা দিবস। এই দিবসের মূল উদ্দেশ্য, মাকে যথাযথ সম্মান দেওয়া। যে মা জন্ম দিয়েছেন, লালন-পালন করেছেন, তাঁকে শ্রদ্ধা দেখানোর জন্য দিবসটি পালন করা হয়। প্রকৃতপক্ষে কোন দিবস নয় মাকে ভালোবাসতে হবে প্রতিটি সময়েই।

আরাফাত সাইফ
শিক্ষার্থী, ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সাইন্স অনুষদ
গণ বিশ্ববিদ্যালয়

মাকে কখনো কোন বর্ণ বা অক্ষরে প্রকাশ করা যায় না

মা ছোট শব্দ হলেও এর অর্থ কতটা বিশাল তা কল্পনাতীত। মাকে কখনোই কোন বর্ণ বা অক্ষরে প্রকাশ করা যায় না। যার মা নেই একমাত্র তিনিই জানেন তার কাছে কি নেই। প্রত্যেকটি মা তার সন্তানের কাছে শ্রেষ্ঠ। আমার মা আমার কাছে জান্নাতের এক টুকরা হীরা, আমার আদর্শ। যার কাছ থেকে বারবার প্রেরণা পেয়ে থাকি, প্রতিদিন কিছু না কিছু শিখে যাচ্ছি। তিনি আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু যে কিনা আমার সব ভুলগুলা শুধরে দিয়ে চলার পথ সহজ করে দেন।

আরও পড়ুন: যেভাবে এলো মা দিবস

আমার মা একজন গৃহিনী যিনি নিপুণতার সাথে পুরো সংসার সামলাচ্ছেন। তিনি একজন শিক্ষক কেননা জীবনের প্রথম শিক্ষা আমি তার কাছ থেকেই পেয়েছি। আমার মা একজন ডাক্তার, জর সর্দি হলে রাতের পর রাত জেগে সেবা করছেন। আমার মা একজন স্বপ্নচারিনী যিনি আমাকে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন। মা আসলে এমন যাকে বোঝা অসম্ভব। তার হাজার কষ্টেও সন্তানকে ছায়া দিতে ভোলেন না। মাকে হয়তো মুখে বলা হয় না ভালেবাসি, খুব ভালবাসি মা তোমাকে।

হুমায়রা আনজুম শ্যামসী
শিক্ষার্থী, সিএসই বিভাগ
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

কখনো বলা হয়ে উঠে না, তোমায় বড্ড ভালোবাসি মা

আকারে অতিশয় ক্ষুদ্র, উচ্চারণে শ্রুতিমধুর, ব্যাপকতায় অনেক ভারী একটি শব্দ ‘মা’। যে কিনা শুধু ভালোবাসতে জানে, শুধু ত্যাগ করতে জানে, শুধু দিতেই জানে, জানে শুধু অকাতরে নিজেকে বিলিয়ে দিতে। সেই হলো মমতাময়ী মা। মায়ের আদর, ভালোবাসার ভিখারী আমরা সবাই, যার কোন তুলনা হয় না, হয় না কোন বিনিময়। 

মায়ের ভালবাসার গভীরতা, ব্যাপকতা একমাত্র সেই অনুভব করতে পারে যে তার মাকে হারিয়েছে। সেই জানে মা শব্দ কতটা ভারী। যার মা নেই এই দুনিয়ায় তার যেন কিছুই নেই। ভালো থাকুক সকল মা। বেঁচে থাকুক সকল মা। এই মা দিবসে সকল মমতাময়ী মায়েদের প্রতি জানাই সহস্র সালাম, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। এত কিছুর পরও কখনো বলে ওঠা হয় না, তোমায় বড্ড ভালোবাসি মা।

গোলাম কবির হিমুল
শিক্ষার্থী, টেক্সটাইল ফ্যাশন এণ্ড ডিজাইন বিভাগ
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় 

আমার মা থাকে না যেন অনাহারে

মা, এই শব্দটির সাথে জড়িয়ে একজন মানুষের জন্ম এবং বেড়ে উঠার গল্প। একজন সন্তানের প্রথম শিক্ষকও একজন মা। যার কল্যাণে পৃথিবীতে আলোর মুখ দেখা হয়ও সন্তানের। আজ বিশ্ব মা দিবস। মা দিবসের মূল উদ্দেশ্য, মাকে যথাযথ সম্মান দেওয়া। যে মা জন্ম দিয়েছেন, লালন-পালন করেছেন, তাকে শ্রদ্ধা দেখানোর জন্য দিনটি পালন করা হয়।

আমাদের সকলের উচিত প্রত্যেক মাকে সম্মান করা এবং মায়ের অধিকার রক্ষায় সচেতন হওয়া। মা দিবসে সবার প্রতি একটাই আহ্বান ‘আমার মা থাকে না যেন অনাহারে’। আজকাল বৃদ্ধাশ্রমে ও পথে ঘাটে যে হারে মায়েদের দেখা যায় সত্যিই খুব কষ্টদায়ক। আমরা একটু সচেতন হলেই তা প্রতিরোধ করতে পারি। আসুন দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাই, মানুষ হই। মায়েদের ভালোবাসি।

তানিউল করিম জীম 
শিক্ষার্থী, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়,ময়মনসিংহ