বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে করোনায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে

আবাসিক হল
আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা

দেশের করোনা প্রকোপ বেড়েছে। সংক্রমণের হার ২০ শতাংশের ওপরে। করোনা সংক্রমণ বাড়ায় দুইটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে সশরীরে ক্লাস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে তারা। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সশরীরে ক্লাস চালু রেখেছে। তবে সব বিশ্ববিদ্যালয়ই আবাসিক হল ও শিক্ষকদের কোয়ার্টার খোলা রাখা হয়েছে।

এদিকে আবাসিক হলগুলোতে করোনায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত ৩৩ জন। আক্রান্ত সবাই সুস্থ আছেন। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা অনেক শিক্ষার্থী আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীও আক্রান্ত হয়েছেন।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির আটটি হলে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ জন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সংখ্যা সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, এ সংখ্যা বেড়েছে। রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইটি হলে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন চারজন। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আক্রান্ত হয়েছেন তিনটি হলে চারজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের গণরুমের এক শিক্ষার্থীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

আরও পড়ুন- ভিসি অপসারণে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেধে দেবে শিক্ষার্থীরা

বুয়েট কর্তৃপক্ষ বলছেন, আক্রান্তদের তারা হলের তত্ত্বাবধানে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। হলে বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও আইসালেশন করার ‍সুযোগ নেই। তাই আক্রান্তদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, সব শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। যারা অসুস্থ বোধ করছেন তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে যাদের করোনা শনাক্ত হচ্ছে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি। সংস্পর্শে আসা শিক্ষার্থীদের আইসোলেশন করানোর ব্যবস্থা নেই বলেও জানান তিনি। হল বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি আরেকটু দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। 

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. রবিউল আওয়াল বলেন, এখন পর্যন্ত চারজন শিক্ষার্থী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নেয়া হয়েছে। এর আগে তারা নিজ নিজ হলে আইসোলেশনে ছিলেন।

আরও পড়ুন- শাবিপ্রবিতে বিক্ষোভ-আন্দোলনের শুরু যেভাবে, যে কারণে

শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশে নামার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছিলো। তবে এখন সংক্রমণের হার ২০ শতাংশের ওপরে। তবুও হল বন্ধের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেও হলের বাহিরে অবস্থানের সময় তাদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত হচ্ছে না। এই অবস্থায় হলে থাকা তাদের জন্য নিরাপদ নয়।

এ বিষয়ে বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের আবাসিক হলে অবস্থানরত ২৪ শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের গাড়ি ভাড়া করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে এদের কারণে অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা আবাসিক হল বন্ধের বিষয়টি জাতীয় বিষয়। এখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয় আছে। তাদের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেলে আমরা আবাসিক হল বন্ধ করে দেব।