কৃষকের ১০ হাজার তরমুজ গাছ উপড়ালেন প্রকৌশলী

কৃষক দেলোয়ার
কৃষক দেলোয়ারের কান্না

নিজের জমি নেই তাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধের ঢালে প্রায় ১৫ হাজার তরমুজ গাছ লাগিয়েছিলেন কৃষক দেলোয়ার খলিফা। কিন্তু এর মধ্যে পাউবো উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম প্রায় ১০ হাজার তরমুজ গাছ উপড়ে ফেলেছেন। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পশ্চিম চাপালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

একাধিক এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে তরমুজ চাষে মোট আড়াই লাখ টাকা খরচ করেছিলেন কৃষক দেলোয়ার। তরমুজের ফলনও ভালো হয়েছিল। আর ১ মাস গেলেই বাজারে বিক্রি করতে পারতেন। কিন্তু রবিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে স্বপ্ন ভেঙ্গে দেন পাউবোর প্রকৌশলী।

কাঁদতে কাঁদতে দেলোয়ার বলেন, আমি কয়েক বছর ধরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে বিভিন্ন সবজি চাষ করে আসছি। বনবিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই তরমুজের চাষ শুরু করি। ​এখানে দায়িত্বে থাকা বনবিভাগের মোশাররফ নামের এক অফিসারকে ১০ হাজার টাকাও দেই। তারা প্রতিদিন এখানে আসতো গাছ দেখতো কিন্তু আজ হঠাৎ এসে আমার প্রায় ১০ হাজার গাছ নিজে উপড়ে ফেললো। আমি অনেক কান্নাকাটি করেছি। হাত, পা ধরেছি কিন্তু তারা শোনেনি। আমাকে একটা মাস সময় দিলে আমার এই সর্বনাশটা হতো না। এখন আমার গাছ উপড়ে আমাকে মামলার হুমকি দিয়ে গেছে।

আরও পড়ুন- ‘আমি চাই আমার মৃত্যুর খবর চারদিকে প্রচার হোক’

টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা গঙ্গামতি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ বলেন, আমি কোন টাকা পয়সা নেইনি, এগুলো সব মিথ্যা। নিষেধ করার পরও সে গাছ লাগিয়েছে। মাটি ক্ষয়রোধে লাগানো ঘাস ও ডুমুর গাছ নষ্ট হওয়ার কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী তরমুজ গাছ উপড়ে ফেলেছে।

পাউবোর বেড়িবাঁধ রক্ষা প্রকল্পের প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, ওখানে যে তরমুজ গাছ লাগানো হয়েছে তা আমি আগে দেখিনি, আজকে দেখলাম। আমাদের বেড়িবাঁধ রক্ষায় লাগানো ঘাস কেটে উঠিয়ে ফেলার কারণে কিছু জায়গা রেখে বাকি তরমুজ গাছ আমি উঠিয়ে ফেলেছি।

আরও পড়ুন- করোনায় আক্রান্ত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক জানান, বিষয়টি আমি মাত্রই শুনলাম যদি লিখিত কোনো অভিযোগ পেয়ে থাকি তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।