প্রথম বাংলা লেখার সফটওয়্যার

শহীদলিপি দিয়ে মাকে প্রথম চিঠি লিখেছিলেন সাইফুদ্দাহার

বাংলা প্রচলন
কম্পিউটারে বাংলা প্রচলনের পথিকৃৎ সাইফুদ্দাহার শহীদ

কম্পিউটারে প্রথম বাংলা লেখার সফটওয়্যার 'শহীদলিপি'র নির্মাতা সাইফুদ্দাহার শহীদ মারা গেছেন। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর আলবুকার্কে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি আলঝেইমার এবং অন্যান্য জটিলতায় ভুগছিলেন। সাইফুদ্দাহার শহীদ স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। 

জানা যায়, কম্পিউটারে বাংলা লিখতে 'বিজয়' কিবোর্ডের আগেই 'শহীদলিপি' তৈরি করেন সাইফুদ্দাহার শহীদ। ১৯৮৫ সালের ২৫ জানুয়ারি নিজের উদ্ভাবিত সেই বাংলা ফন্ট শহীদলিপি দিয়ে মাকে প্রথম চিঠি লিখেছিলেন তিনি।‌ এটি করা হয়েছিল ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্য। পরে শহীদলিপি ব্যবহার করে তারকালোক এবং দৈনিক আজাদসহ বেশ কিছু পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছিল। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের প্রথম সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির প্রতিষ্ঠাকালীন সহসভাপতি ছিলেন সাইফুদ্দাহার শহীদ। ১৯৭৯ সালের ২০ মে তার উদ্যোগ গঠিত হয় বাংলাদেশ অ্যামেচার রেডিও লিগ (বিএআরএল)। 

আরও পড়ুন: এ মাসের মধ্যে ৭৫ লাখ শিক্ষার্থীকে টিকা

ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান আজ মঙ্গলবার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, আমি জানি না এমন একজন গুণী মানুষ কেন দেশ ছেড়ে প্রবাসের জীবন বেছে নিলেন। ৯০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান সাইফুদ্দাহার শহীদ। সেখানেই মারা গেলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি আলঝেইমার এবং অন্যান্য জটিলতায় ভুগছিলেন। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতবাসী করুন।

শরিফুল হাসান লিখেন, আফসোস একটাই বেঁচে থাকতে আমরা আমাদের বহু গুণীজনদের সম্মান জানানো তো দূরের কথা তাদের নামটাও জানতে পারি না।‌ জানাতে পারি না। পরে মরণোত্তর কোন পদক দিয়ে তাকে সম্মান দেয়ার চেষ্টা করি। অথচ কম্পিউটারে প্রথম বাংলা লেখার সফটওয়্যার 'শহীদলিপি'র নির্মাতা হিসেবে তাকে আমাদের সম্মানিত করা উচিত ছিলো। এই সুযোগে আমি বিজয় কি বোর্ডের প্রতিষ্ঠা মোস্তফা জব্বারকে ধন্যবাদ জানাই। আরো বেশি ধন্যবাদ দেই অভ্র কিবোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা মেহদী হাসান খানকেও। তিনি এই প্রজন্মকে অভ্র চিনিয়েছেন। আমি মনে করি তাকেও আমাদের সম্মানিত করা উচিত।

আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হতে পারে এইচএসসির ফল

তিনি আরও লিখেন, আসলে একটা জাতি যদি তার গুণীজনদের সম্মান না করে, মর্যাদা না দেয় তাহলে তাদের অনেকেই হয় দেশ ছাড়বেন একদিন ছাড়বেন দুনিয়া। কাজেই চলুন এর আগেই গুণীজনদের সম্মান দেই। দেশে বিদেশে ভালো থাকুন সবাই। ভালো থাকুক প্রিয় বাংলাদেশ।

উল্লেখ্য, সাইফুদ্দাহার শহীদ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি (বুয়েট) থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ঢাকায় ন্যাশনাল কম্পিউটার নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। সেখানেই 'শহীদলিপি' তৈরি হয়। ৯০ এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান সাইফুদ্দাহার শহীদ।