বেরোবি এলাকায় বেড়েছে ছিনতাই

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) এলাকায় দিনদিন বেড়ে চলেছে ছিনতাই। এসব ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অস্ত্র ঠেকিয়ে করা হচ্ছে সর্বস্ব লুট। এতকিছুর পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তেমন তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

ছিনতাইয়ের স্পট হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক গেটের সামনে, মর্ডান থেকে পার্ক মোড় সড়ক, লালবাগ থেকে পার্ক মোড় সংলগ্ন রাস্তা ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিভিন্ন অলিগলি। কথিত আছে মর্ডান থেকে লালবাগ রাস্তায় এক সময়ে দিন দুপুরে খুন ও লুট করা হতো।

এ বিষয়ে মাহরুফা আফরোজ মিরা জানান, ক্যাম্পাস থেকে মেসে যাওয়ার পথে অ্যাকাডেমিক গেটের সামনে একা পেয়ে আমার ব্যাগ ও মোবাইল কেড়ে নেয় অপরিচিত এক যুবক। আমি খুবই ভয় পেয়েছিলাম। পরে পুলিশ ও প্রক্টর স্যারকে বিষয়টি জানাই।

এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পরাগ মাহমুদকে রাত আড়াইটায় বেরোবি অ্যাকাডেমিক গেটের (১নং গেট) সামনে এবং বেরোবির ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মনিরুজ্জামানকে পার্কমোড়-লালবাগ রাস্তায় সকাল ছয়টায় জগিংরত অবস্থায় নৃশংসভাবে ছুরিকাঘাত করে ছিনতাই করে। শিক্ষক মনিরুজ্জামানকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এবং শিক্ষার্থী পরাগ মাহমুদকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিতে হয়।

এর আগে, গত ২০ আগস্ট ভোরবেলা বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ‘শামস ভিলা’ ছাত্রাবাসে তালা ভেঙ্গে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হুদা এবং ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী মাসুদ রানাকে রুমে ঢুকে তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মোবাইল ও সাথে থাকা টাকা পয়সা নিয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উমর ফারুক বলেন, করোনার কারণে মানুষের কর্মসংস্থান না থাকায় কিছু মানুষ বিপদগামী হয়ে উঠেছে ও আয়ের জন্য অসৎ পথ অবলম্বন করছে। অন্য একটি কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের এই অঞ্চলে নেশা ও জুয়ো দুটোই বেড়েছে। নেশা করার টাকার প্রয়োজনে যুবকরা ছিনতাইয়ের পথ বেছে নিচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ইলিয়াস ছাব্বির বলেন, সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে। বিশেষ করে এলাকার যুবক যারা অপরাধকে অপছন্দ করে তাদের কাজে লাগাতে হবে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার মানুষের সহযোগিতা নিতে হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খুবই তৎপর। বাড়তি নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসে সার্চলাইট বসানো হয়েছে। পুলিশকে টহল জোরদার করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচীর থেকে বাইরের দিকে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য ডিআইজির সঙ্গে কথা বলেছি।