এসএসসির শেষ পরীক্ষা দেওয়া হলো না শান্তার

পরীক্ষা
এসএসসি পরীক্ষার্থী শান্তা

এসএসসি পরীক্ষা ছিল বাকি আর মাত্র একটি কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন সন্তান জন্ম দিয়ে শেষ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারলেন না শান্তা খাতুন (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর। সে এ বছর গোয়ালন্দ আইডিয়াল হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।

সোমবার বাচ্চা প্রসব করায় মঙ্গলবারের শেষ হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি এই শিক্ষার্থী। শান্তা গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের নুরু মন্ডলপাড়ার গ্রাম্য চিকিৎক শহিদুল ইসলামের মেয়ে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকার বখাটে ছেলেদের উৎপাতের হাত থেকে রক্ষা পেতে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে মাত্র ১৪ বছর বয়সে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় শান্তাকে বিয়ে দেই তার পরিবার। বিয়ের পরও সে প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির জোরে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যেই শান্তার গর্ভে সন্তান আসে।

গর্ভাবস্থায় সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। কিন্তু শেষ হাসি আর হাসা হলো না তার। শেষ পরীক্ষার আগের দিন সে কন্যাসন্তান জন্ম দেয়। এতে প্রচণ্ড শারীরিক দুর্বলতার কারণে সে মঙ্গলবারের ‘পৌরনীতি ও নাগরিকতা’ বিষয়ে অংশ নিতে পারেনি।

শান্তা খাতুন বলেন, ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিলো পড়ালেখা করে ভালো চাকরি করব। তাই অল্প বয়সে বিয়ে হলেও শত সংগ্রাম করে নিজের পড়ালেখাটা চালিয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে কলেজে ভর্তি হব। কিন্তু শেষ হাসিটা আমার হাসা হলো না। আমি আমার শারীরিক দুর্বলতার কাছে হেরে গেলাম। তবে চেষ্টা করব আগামীবার পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার।

পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব মুহম্মদ সহিদুল ইসলাম বলেন, এ বছর গোয়ালন্দ থেকে ১ হাজার ১৪৫ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এরমধ্যে ফরম পূরণ করার পরও ১৮ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। আমার ধারণা এদের সবাই শান্তার মতো বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রফিকুল ইসলাম বলেন, কক্ষ পরিদর্শন করতে গিয়ে জানতে পারি বাচ্চা জন্ম নেওয়ায় শান্তার শেষ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। আমরা চেষ্টা করছি বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে কিন্তু নানা কারণে তা পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না।