চমেক অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি ছাত্রলীগের একাংশের

চমেক অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি ছাত্রলীগের একাংশের
চমেক অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি ছাত্রলীগের একাংশের

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের (চমেক) অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তারের পদত্যাগ দাবি করেছে শাখা ছাত্রলীগের একাংশ। বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংগঠনটির একাংশের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। তারা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী বলে জানা গেছে।

লিখিত বক্তব্যে ছাত্রলীগ নেতা কেএম তানভীর বলেন, অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক চর্চা বন্ধের লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করেন এবং জঙ্গীবাদ বিরোধী ছাত্রলীগের কর্মসূচীতে বাধা দেন।

‘ফলশ্রুতিতে বর্তমানে ক্যাম্পাসে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াত-শিবিরের নানা কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে। তার এরূপ গর্হিত কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অনতিবিলম্বে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করছি।’

পড়ুন: বহিষ্কারাদেশের বিপক্ষে ‘এক হয়েছেন’ ছাত্রলীগ

একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৩ নিরীহ শিক্ষার্থীকে কোনো রকম সাক্ষ্য প্রমাণ ছাড়া শুধুমাত্র মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কার করা হয়েছে, যারা সংশ্লিষ্ট ঘটনার সঙ্গে জড়িন নন। এমনকি তাদেরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি।’

তানভীর আর বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মেধাবী ছাত্র আকিবের ওপর হামলাকারী ছিল ১৬ জন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তাদের চেহারা স্পষ্ট শনাক্ত করা যাচ্ছে। ঘটনায় জড়িত সবার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে নির্দোষ ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, যা আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি।’

তিনি জানান, ৩০ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ৬২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মাহাদী আকিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে একদল ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বর্বরোচিত হামলা চালায়। এতে আকিব জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দীর্ঘদিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি এখনও গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কুমিল্লার বাসায় অবস্থান করছেন।

তার অভিযোগ, দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত অধ্যক্ষ যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেননি, বরং তদন্ত কমিটি গঠন ও এর কার্যক্রমের নামে কালক্ষেপণ করে সুপরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছেন।

চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ছাত্রলীগের দুপক্ষে সংঘর্ষের ঘটনায় গত মঙ্গলবার কলেজের একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে ৩০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন তানভীর।

এর আগে, গত ২৯ অক্টোবর রাতে ও ৩০ অক্টোবর সকালে চমেকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের মধ্যে দুই দফায় ওই সংঘর্ষ হয়।

পরে ৩০ অক্টোবর সকালের সংঘর্ষে আহত হন মাহাদী আকিব, মাহফুজুল হক ও নাইমুল ইসলামের তিনজন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে আকিব নওফেলের অনুসারী ও বাকি দুজন নাছির উদ্দীনের। এরপরই কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়।