প্রথম বর্ষের নবীনদের জন্য পরামর্শ

রাবি শিক্ষার্থী ইসতিয়াক হোসেন
রাবি শিক্ষার্থী ইসতিয়াক হোসেন

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আসসালামু আলাইকুম। আশা করি, আপনার সকলেই ভালো আছেন এবং আপনাদের স্বপ্নের ক্যাম্পাসে ফেরার স্বপ্নে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর নতুন পরিবেশে খাওয়াতে সময় লাগতে পারে।  এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কিছুই আপনার প্রতিকূলে যেতে পারে। এতে ভেঙ্গে পড়ার কিছুই নেই। আবার সব কিছু অনুকূলে গেলেও অহংকারী হয়ে নিজের আগের অবস্থান এবং লক্ষ্য থেকে বিচ্যূত হওয়া যাবে না।  

অনেককেই দেখবেন শুধু টপার ভাই-আপুদের নিয়ে মাতামাতি করছে। এগুলো করবেন না। টপার, ব্যাকবেঞ্চার সবার সাথেই সময় দিবেন। ভার্সিটিতে সবাই মেধাবী। মেধা না থাকলে কেও ভার্সিটিতে চান্স পায় না।  টপার ভাইয়ের কাছে পরীক্ষায় ভালো করার পরামর্শ পেলে, ব্যাকবেঞ্চার ভাইয়ের কাছে পাবেন জীবনের নানা অভিজ্ঞতা। দুটোই দরকার হবে জীবন চলার পথে।

প্রথম বর্ষে প্রচুর ভুল হতে পারে। যত ভুল করবেন তত এক্সপেরিয়েন্স অর্জিত হবে, তত দারুণ দারূণ স্মৃতি তৈরি হবে। প্রথম বর্ষই মূলত ভুল করার সময়। কারণ তখন ভুল করলে আপনি ক্ষমার যোগ্য। কিন্তু একটু সিনিয়র হয়ে গেলে আর ভুল করে ক্ষমা পাওয়ার সুযোগ থাকে না। তবে সীমার মধ্যে থেকে সবকিছু করতে হবে।

নিজেকে একটু আপডেট করার চেষ্টা করবেন। সেটা হতে পারে কথাবার্তায়, চিন্তাভাবনায়, আচার-আচরণে, পোশাক-বডি ল্যাংগুয়েজ ইত্যাদি।

প্রথম বর্ষে ক্যাম্পাসে প্রেম-ভালোবাসা থেকে দূরে থাকবেন। এগুলো করতে যেয়ে বন্ধুদের সময় দিতে পারবেন না। এ এক বছর প্রচুর কানেকশন তৈরি করতে হবে চারপাশে। বন্ধুদের সাথে ভালো একটা সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। এখানে বন্ধুরা এবং কিছু কাছের বড়ভাই- আপুরাই আপনার একমাত্র পরিবার। 

জীবনে প্যারা নেওয়ার অনেক সময় পাবেন। তাই ফাস্ট ইয়ারে প্যারা নেওয়ার কোন দরকার নেই। ক্যাম্পাসটা আবিষ্কার করার চেষ্টা করবেন। নিজের মধ্যে লুকায়িত প্রতিভা আবিষ্কার আর প্রকাশের চেষ্টা করবেন।

ক্লাসগুলো রেগুলার এটেন্ড করবেন। ক্লাস গুলো মনোযোগ দিয়ে শুনবেন।গুরুত্বপূর্ণ জিনিস গুলো টুকে নিবেন।রেগুলার একটু একটু করে পড়ে রাখবেন। দেখবেন পরীক্ষায় ভালো একটা রেজাল্ট চলে এসেছে।

একটু পেছনের দিকের সাবজেক্টে পড়ার কারণে কখনোই হীনমন্যতায় ভুগা যাবে না।হাজার হাজার ছেলেমেয়েকে পিছনে ফেলে এখানে আপনি এসেছেন— এটা সবসময় মনে রাখবেন। যে ডিপার্টমেন্টেই পড়েন না কেন সে ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে সেরা স্টুডেন্ট হওয়ার চেষ্টা করবেন। 

এমনভাবে ক্যাম্পাস লাইফটা কাটাবেন যাতে ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটা ছেলেমেয়েই যেন আপনাকে চিনে, আপনার রেজাল্ট ও যেন মোটামোটি ভালো থাকে। সাথে চাকরির/স্কলারশিপের প্রিপারেশনটাও যেনো অনেকটা হয়ে যায়।

যারা দেশের বাইরে যেতে চান তারা অবশ্যই প্রথম থেকেই রেজাল্ট ভালো করার দিকে গুরুত্ব দিবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক স্বাধীনতা পাবেন। প্রথম বর্ষটা ভালোভাবে উপভোগ করার চেষ্টা করবেন। তবে এমন কিছু করবেন না যেটা আপনাকে অন্ধকার জগতের দিকে ঠেলে দেয়। পরিবার, জাতি, সমাজ, রাষ্ট্র আপনার থেকে অনেক কিছু আশা করে। তাই সেভাবেই চলার চেষ্টা করবেন।

লেখক: শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।