বাল্যবিবাহ ও জীবিকার তাগিদ, এক উপজেলায় ঝরে পড়েছে ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী

বাল্যবিবাহ
বন্ধ থাকাকালীন বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে সাত শতাধিক শিক্ষার্থী ঝরে পরেছে

করোনা মরামারির কারণে দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর গেলো ১২ সেপ্টেম্বর দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলা হাকিমপুরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সাত শতাধিক শিক্ষার্থী হয়তো আর কখনও শ্রেণিকক্ষে ফিরবে না। বন্ধ থাকাকালীন বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে সাত শতাধিক শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। এই সময়ে বাল্যবিয়ে হয়েছে পাঁচ শতাধিক ছাত্রীর। আর দুই শতাধিক ছাত্র পোশাক কারখানা ও রাজমিস্ত্রিসহ বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় বিদ্যালয় খুললেও শিক্ষার্থী উপস্থিতি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।

হাকিমপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় তিনটি কলেজ, তিনটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ১৮টি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১৩টি ফাজিল ও দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে করোনাকালে পাঁচশ’ ছাত্রীর বাল্য বিয়ে ও দুইশ’ ছাত্রের বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

হিলির জালালপুর দ্বিমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল সিদ্দিক বলেন, আগে আমাদের স্কুলে যত শিক্ষার্থী ছিল, করোনার কারণে দীর্ঘ বন্ধের পর সেই সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে চলে এসেছে। অনেক ছাত্র বিভিন্ন কাজে চলে গেছে। তারা আর স্কুলে আসছে না। অনেক ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে।

বাংলাহিলি পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা কামাল বলেন, বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী আছে যাদের পরিবার দরিদ্র। করোনার কারণে দীর্ঘ সময় ছুটির ফাঁকে তারা হয়তো বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। কারো দোকানে কাজ করছে। এমনও শিক্ষার্থী আছে তার বাড়িতে ঠিকমতো খাবার নেই। তারা বাধ্য হয়েই কাজে জড়িয়ে পরেছে। এছাড়া অভিভাবকরা মেয়েকে নিয়ে যতটা আর্থিক ভাবনায় পড়ে তার চেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় পড়ে সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে। যার ফলে দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বাল্য বিবাহ বেড়েছে।