রেইনট্রিতে আলোচিত ২ শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার রায় পেছালো

অপরাধ
রেইনট্রিতে আলোচিত ২ শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার আসামি

রাজধানীর বনানীতে দ্য রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার রায় পিছিয়েছে। বিচারক অসুস্থ থাকায় এই রায় পিছিয়েছে। এখন নতুন তারিখ ধার্য করেননি আদালত।

আজ মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক এ আদেশ দেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের পেশকার মো. ইলিয়াস।

ধর্ষণের ওই ঘটনায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোসাম্মৎ কামরুন্নাহারের আদালতে রায় ঘোষণার কথা ছিল।

এর আগে গত ৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন। এ সময় আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় মোট ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাতে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন আসামি সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ। ঘটনার দুইমাস পর ৬ মে বনানী থানায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

এরপর একই সালের ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে। পরে ১৩ জুলাই আদালত পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারের আদেশ দেন।

সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ছাড়া মামলার অপর তিন আসামী হলেন- সাফাতের বন্ধু সাদমান সাকিব, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত অভিযুক্তরা মামলার বাদী, তার বান্ধবী ও বন্ধুকে আটকে রাখে। অস্ত্র দেখিয়ে ভয় প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। বাদী ও তার বান্ধবীকে জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যায় আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ ও তার বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, সাদমান সাকিফকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তার মাধ্যমেই ঘটনার ১০ থেকে ১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই শিক্ষার্থীর পরিচয় হয়। ওই দুই শিক্ষার্থী সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডে রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তার বান্ধবী জানতেন না যে, সেখানে পার্টি হবে। তাদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে।

সেখানে যাওয়ার পর তারা কাউকে দেখেননি। সেখানে আরও দুই তরুণী ছিলেন। বাদী ও তার বান্ধবী সাফাত ও নাঈমকে ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যেতে দেখেন। এ সময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় তারা চলে যেতে চান। এ সময় অভিযুক্তরা তাদের গাড়ির চাবি শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেয় এবং তাকে মারধর করেন। ধর্ষণের সময় গাড়িচালককে ভিডিও করতে বলেন সাফাত। বাদীকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন।