সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এইচএসসি, ভর্তি পরীক্ষাও কি সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে?

বিশ্ববিদ্যালয়
ভর্তি পরীক্ষার্থী

করোনাভাইরাসের কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে পরীক্ষার রুটিনও প্রকাশ করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এইচএসসি পরীক্ষা হলেও ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল-বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকেই হবে নাকি পুরো পাঠ্যবইয়ের আলোকে হবে সেটি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন মূলত একজন শিক্ষার্থী কতটুকু শিখেছে সেটি যাচাইয়ের জন্য করা হয়। শিক্ষার্থীদের এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হলেও তারা দুই বছরেরও বেশি সময় পেয়েছে নিজেদের প্রস্তুত করার জন্য। এক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে প্রশ্ন না হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।

তারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করতে চাইলে তাদের উচ্চমাধ্যমিকের পুরো বই শেষ করতে হবে। বিগত বছরগুলোতে যারা ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করেছে, তারা উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির পরপরই নিজেদের প্রস্তুত করতে শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে প্রশ্ন হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে যেহেতু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। সেহেতু পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নিতে চান তারা।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন  সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনবৃন্দ। এক্ষেত্রে পরীক্ষার পূর্বে ডিনদের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার এখনো অনেক সময় বাকি আছে। এটি আলোচনার সময় এখনো আসেনি। তবে বিষয়টি নিয়ে আমাদের ডিনবৃন্দের সাথে আলোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নের কাজ অত্যন্ত বিচক্ষণ ব্যক্তির মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয় জানিয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. একেএম আহসান হাবীব দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন যারা তৈরি করেন তারা অত্যন্ত বিচক্ষণ ব্যক্তি। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তারা জানেন। ফলে সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই তারা প্রশ্ন তৈরি করবেন।

অধ্যাপক ডা. একেএম আহসান হাবীব আরও বলেন, যেহেতু করোনার কারণে সবকিছুই নতুনভাবে চিন্তা করা হচ্ছে সেহেতু ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন করার সময় করোনার বিষয়টি মাথায় রাখা হবে। তবে আগামী বছরের ভর্তি পরীক্ষার এখনো অনেক সময় বাকি আছে। তখন সবার সাথে আলোচনা করে এই বিষয়ে করণীয় ঠিক করা হবে। 

এদিকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনার কারণে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত ছিল। অনলাইনে ক্লাস হলেও সেটি যথেষ্ট ছিল না। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ায় তারা নিজেদের সেভাবেই প্রস্তুত করছেন। 

এ প্রসঙ্গে বগুড়া পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান বলেন, গত দেড় বছর আমরা সশরীরে কোনো ক্লাস করতে পারিনি। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে আমাদের এইচএসসি পরীক্ষা হবে। তবে ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে হবে সে বিষয়ে কোনো ধারণা পাচ্ছি না। বিষয়টি আমাদের এখনই স্পষ্ট করা দরকার।

একই কলেজের আরেক শিক্ষার্থী হোসাইন রাশেদ বাদল বলেন, করোনার কারণে যেহেতু অনেক কিছুতে ছাড় দেওয়া হচ্ছে। সেহেতু ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের বিষয়েও ছাড় দেওয়া দরকার। যে সিলেবাসের আলোকে আমরা এইচএসসি পরীক্ষা দেব, সেই সিলেবাসের আলোকেই ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন করা উচিত। এতে করে ভর্তি পরীক্ষায় প্রকৃত মেধার মূল্যায়ন করা যাবে।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী আগামী ২ ডিসেম্বর থেকে পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষা শেষ হবে ৩০ ডিসেম্বর।