বৃদ্ধাশ্রমে যেতে না চাইলে আপনার সন্তানকে সময় দিন

প্রযুক্তি
আপনার সন্তানকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে প্যারেন্টিংয়ের কোনো বিকল্প নেই

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশু বয়সেই সন্তানদের ভবিষ্যৎ জীবনের স্বপ্ন জাগিয়ে সৎ এবং দক্ষ করে গড়ে তুলতে হয়। শিশুরা সাধারণত অনুকরণপ্রিয় এবং নেতিবাচক দিকে অন্য বয়সীদের তুলনায় বেশি দূর্বল। এ সময় একটা শিশুকে নৈতিকতাসম্পন্ন হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে সেটার প্রভাব শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনেও বিদ্যমান থাকে।

এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে হয় বাবা-মাকে। কিন্তু তারাই যদি সন্তানের সামনে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন এবং সন্তানদেরকে সময় না দেন এবং শিশুদের ধর্মীয় মূল্যবোধ শিক্ষা না দেন,  তাহলে একটা শিশু ভাল মানুষ হিসেবে কিভাবে গড়ে ওঠবে ?

অনেকসময় দেখা যায়, সন্তানের হাতে স্মার্টফোন দিয়ে বাচ্চার মা ঘরের কাজে যান। এর ফলে দিনে দিনে ঐ শিশু মোবাইলে এতটাই আসক্ত হয়ে পড়ে যে, পরবর্তীতে পড়াশোনা তার কাছে চরম বিরক্তির বিষয়ে পরিণত হয়। আবার অনেকসময় দেখা যায়, শিশুর বাবা বাসার বাইরের পার্কে হাঁটতে গেলে কিংবা নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে গেলে শিশুকে সাথে নিয়ে যান না। অনেকে হয়তো শিশুর আচরণকে নিজের সম্মানের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেন, যার ফলে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তাই অভিভাবকদের বলব, আপনার সন্তানকে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাইলে প্যারেন্টিংয়ের কোনো বিকল্প নেই। আপনার সন্তান বাসার বাহিরে গেলেও খোঁজ-খবর রাখুন। সন্তানকে চাহিবামাত্র সব কিছু দিবেন না। তার স্বপ্ন বা ইচ্ছা শর্তসাপেক্ষে পূরণ হতে দিন।  আপনার সন্তান আপনার শিক্ষার্থী, আপানার ভবিষ্যৎ এবং সম্মান।

আর শিশুদের হাতে স্মার্টফোন না দিয়ে বই তুলে দেন, তাদের নিয়ে ঘুরতে যান। আপনি যে অফিসে কাজ করছেন, সে অফিসে মাঝে মাঝে আপনার সন্তানকে নিয়ে যান— বাস্তবতা শেখাতে। সন্তানের প্রতিভা বিকাশে সচেষ্ট হন, ফুলের কলি থেকে ফুল হয়ে ফুটবে শিশু— এ স্বপ্ন রাখুন।

মসজিদে গেলে শিশুদের মসজিদে নিয়ে যান, তাদের মধ্যে ধর্মীয় চেতনা এবং মানবিকতার প্রসার ঘটান। আপনার বাবা-মা বেঁচে থাকলে সন্তানের সামনেই তাদের সেবা-যত্ম করুন।  অতিরিক্ত সম্পদ অর্জনের পিছনে একটু সময় কম দিয়ে সেটা আপনার শিশুকে এবং আপনার বাবা-মাকে একটু সময় দিন, না হয় আপনার মূল্যবোধহীন সন্তান বৃদ্ধ বয়সে আপনার গুরুত্ব না-ও বুঝতে পারে। আর আপনার সর্বশেষ ঠিকানা হতে পারে ‍বৃদ্ধাশ্রম। শিশুদের সময় দিন, তারাও আপনাদের সময় দিবে— সে আশাবাদ।

লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় & সংবাদকর্মী