‘মেডিকেলে ব্যর্থ হওয়ার পর কোরআনের আয়াত শুনে আশা পাই’

ডেন্টালের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন নাজমুস সাকিব রাহাদ
ডেন্টালের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন নাজমুস সাকিব রাহাদ

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে সরকারি ও বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ ও ডেন্টাল ইউনিটসমূহে প্রথম বর্ষ বিডিএস (ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি) কোর্সে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। প্রকাশিত ফলে জাতীয় মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছেন পঞ্চগড়ের শিক্ষার্থী মো. নাজমুস সাকিব রাহাদ। ভর্তি পরীক্ষায় তার রোল নম্বর-৫৫০৩৪৩৭।

২০২০ সালে তিনি ঢাকার সেইন্ট জোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। তার নির্বাচিত কলেজ হচ্ছে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ। প্রকাশিত ফলে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে রাহাদ মোট ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৯৫ নম্বর পেয়ে জাতীয় মেধায় প্রথম হয়েছেন। নাজমুস সাকিব রাহাদ তার সাফল্য নিয়ে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার কথাগুলো শুনেছেন জামাল রুহানী

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিডিএসে প্রথম হওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন। আপনি কেমন আছেন? আপনার এ সাফল্যে কেমন অনূভুতি হচ্ছে
নাজমুস সাকিব রাহাদ: আলহামদুল্লিাহ ভালো আছি। আমার অনুভূতি কেমন সেটা বলে বুঝানো সম্ভব নয়, সত্যিই অনেক খুশি আমি। এজন্য আমি আমার স্রষ্টা মহান আল্লাহ তা’আলার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার এ সাফল্যে আমার পরিবারও অনেক খুশি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার এই সফলতার পেছনের গল্প কি?
নাজমুস সাকিব রাহাদ: আমার বাবা-মা আমার সাফল্যের অনুপ্রেরণা। তবে আমাকে সার্বিক দিক-নির্দেশনা দিতেন আমার বড় ৩ ভাই। বড় ভাইয়া এবং মেঝ ভাইয়া আমাকে পড়াতেন। আমি তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: মেডিকেলে ব্যর্থ হয়ে ডেন্টালে প্রথম হওয়া— এ ঘুরে দাঁড়ানোটা কিভাবে সম্ভব হলো?
নাজমুস সাকিব রাহাদ: মেডিকেলের জন্য আমার ভালো প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগে আমি অসুস্থ্য হয়ে পড়ি। তখন আমি মানসিকভাবেও ভালো ছিলাম না। সেখানে আমার এক নম্বরের জন্য চান্স হয়নি।

পড়ুন: কোরআন তেলাওয়াত করে মেডিকেলের পড়া শুরু করতেন মুনমুন

এ সময় আমার ভাইয়েরা আমাকে পবিত্র কোরাআনের ‘‘শীঘ্রই তোমার রব তোমাকে এত বেশি দেবেন যে, তুমি খুশি হয়ে যাবে’’, ‘‘তুমি এমন কিছু চাচ্ছ, যা তোমার জন্য কল্যাণকর নয়’’ আয়াতগুলো শুনিয়ে শান্ত্বনা দিয়েছেন এবং আমি আশা খুঁজে পেয়েছিলাম। আমি মনে করি, কখনোই হাল ছেড়ে দেয়া উচিত নয়।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: করোনকালীন পরিস্থিতি আপনার পরীক্ষা প্রস্তুতিতে কেমন প্রভাব ফেলেছে?
নাজমুস সাকিব রাহাদ: মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার আগে করোনা পরিস্থিতিটা অনুকূলে ছিল না। তখন পরীক্ষা হবে কি হবে না— এমন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলাম। তবে ডেন্টালের আগে একটা দীর্ঘ সময় পেয়েছি এবং সেটাকেই কাজে লাগিয়েছি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ভর্তি পরীক্ষায় প্রস্তুতিতে আপনার পড়ার কৌশল কেমন ছিল?
নাজমুস সাকিব রাহাদ: আমি রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়তাম। পরে মধ্যরাতে উঠে আবার পড়ালেখা শুরু করতাম। এরপর পড়া শেষ করে ফজর নামাজ পড়তাম। এ সময়টার পড়া অনেক কাজে দেয়।

পড়ুন: ৩০০-তে ২৯৫ পেয়ে ডেন্টালে প্রথম রাহাদ

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার মধ্যে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নটা কবে থেকে?
নাজমুস সাকিব রাহাদ: আমি ছোট বেলা থেকেই যখন ‘Aim in Life’ রচনা লিখতাম, তখন ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নটাই লিখতাম। তবে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নটা প্রবল হয় কলেজে উঠার পর থেকে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ডাক্তার হয়ে আপনি মানুষকে সেবা দেবেন। কিন্তু দেখা যায় গ্রামের অনেক দরিদ্র পরিবার অর্থাভাবে চিকিৎসাবঞ্চিত থেকে যাচ্ছে।
নাজমুস সাকিব রাহাদ: আমি ডাক্তার হওয়ার পর আমার গ্রামের মানুষদের জন্য কাজ করতে চাই, মাসে অন্তত একবার হলেও তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে চাই।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার সফলতা কামনা করছি।
নাজমুস সাকিব রাহাদ: দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকেও অনেক ধন্যবাদ।