‘স্বপ্ন ছিলো, তাই প্রস্তুতিটাও সেভাবেই শুরু করি’: ডেন্টালে দ্বিতীয় আরিফ

ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা
আরিফুল ইসলাম রেদওয়ান

‘ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল ডাক্তারি পড়ার। তাই সব সময় আল্লাহর কাছে চাইতাম। আর প্রস্তুতিটাও সেভাবে নিতে শুরু করি। অবশেষে আল্লাহ আমার ইচ্ছে পূরণ করেছেন।’ এভাবেই নিজের অনুভূতির কথা জানলেন ২০২০-২১ সালের ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হওয়া আরিফুল ইসলাম রেদওয়ান।

ঢাকার দোহার উপজেলার এ কৃতি সন্তান সারা দেশের ৩৯ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর সাথে লড়াইয়ে নেমে তালিকায় শীর্ষ দুইয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।

গত শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত এ ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় মোট ২৬ হাজার ৭২৬ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন।

পরীক্ষায় দোহার উপজেলার মুকসুদপুর ইউনিয়নের মইতপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে আরিফ ৯৪.২৫ নম্বর পেয়ে জাতীয় মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হয়েছেন।  

রেদোয়ানের স্বজনেরা জানান, ছোটবেলা থেকেই রেদোয়ান মেধাবী ও পরিশ্রমী। এ পর্যন্ত সব বোর্ড পরীক্ষায় সে গোল্ডেন এ+ পেয়েছেন। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং এসএসসি পরীক্ষায় সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পেয়েছেন রেদোয়ান।

দোহারের ড্যাফোডিলস্ হাই স্কুলে মাধ্যমিক শেষ করে আরিফ বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। এরপর নিতে থাকেন ভর্তি লড়াইয়ের প্রস্তুতি।

আরিফুল ইসলাম রেদোয়ান বলেন, আজকে আমরা এই ফলাফলের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে আমার মা-বাবা এবং শিক্ষকদের। আমার বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল আমি ডাক্তার হব। ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে আল্লাহর রহমতে আমি সে পথে পা রাখতে পেরেছি।

যেকোন বড় সাফল্যের পেছনে পরিশ্রমকেই মূলমন্ত্র মনে করেন আরিফ। সাথে তিনি যোগ করেছেন আরো দুটি চলককে - ধৈর্য আর দোয়া।  

আরিফ বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। তার একান্ত রহমত ছাড়া এই সফলতা পাওয়া সম্ভব হতো না। আর যখন খারাপ লাগতো মা-বাবার সঙ্গে কথা বলতাম। কারণ তারাই আমাকে অনেক বেশি সাপোর্ট আর প্রেরণা দিতেন। সবার দোয়া আমার পথচলাকে আরো সহজ করে দিয়েছে।

টেক্সট ব্ই না গাইড? আরিফ জানলেন, টেক্সট বইয়ের দিকেই বেশি মনোযোগী ছিল সে।

তার ভাষায়, মেডিকেল বা ডেন্টাল ভর্তির প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ প্রশ্নই আসে টেক্সট বই থেকে। তাই যত বেশি টেক্সট বই রিভিশন দেওয়া যাবে, সেটা প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বেশি সহায়ক হবে বলে মনে করি।

আর পড়ার কৌশল নিয়ে তার মন্তব্য, আমি প্রতিটি অধ্যায় শুরু করার আগে প্রশ্ন ব্যাংক দেখে ধারণা নিতাম ওই অধ্যায় থেকে কী ধরনের প্রশ্ন হয়। এভাবে পড়লে অধ্যায়টি ভালোভাবে আত্মস্ত করা সম্ভব হয়।

প্রস্তুতি নিয়ে জানতে চাইলে আরিফ জানালেন অন্য অনেকের মতো তারও ছিলো পরীক্ষাভীতি। কিন্তু সেই ভীতি কাটিয়েও উঠেছে সে। করোনাভাইরাসের কারণে যখন পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন হচ্ছিল তখন ধৈর্য তাকে শক্তি যুগিয়েছে।

আরিফের মতে, পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন হলে সেটি প্রস্তুতির ওপর বড় প্রভাব ফেলে। তবে বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়ে সেই সময়ে প্রস্তুতিকে আরও ঝলিয়ে নেয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। আরিও সেটাই করেছে।