২০ বছরের যুদ্ধের সমাপ্তি

আফগানিস্তান ছাড়ল শেষ মার্কিন বিমান

আফগানিস্তান
আফগানিস্তান ছাড়ল শেষ মার্কিন বিমান

তালেবানের বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই আফগানিস্তান ত্যাগ করেছে মার্কিন বাহিনী। ৩১ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ সব পশ্চিমা দেশকে আফগান ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল তালেবান। সোমবার (৩০ আগস্ট) মার্কিন সামরিক বাহিনীর সবশেষ ফ্লাইটটিও আফগানিস্তান ত্যাগ করেছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। এর মাধ্যমে দেশটিতে ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান হলো। দীর্ঘ দুই দশকের এই যুদ্ধে প্রতিদিন গড়ে ৩০ কোটি ডলার খরচ করতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। আর সামরিক-বেসামরিক মিলিয়ে প্রতিদিন প্রাণ দিতে হয়েছে গড়ে ৩৩ জনকে।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন, তারা ছয় হাজার মার্কিন নাগরিকসহ ৭৯ হাজার মানুষকে কাবুল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গেছে। ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল দখল করার পর অল্প সময়ের মধ্যে সব মিলিয়ে কাবুল থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন দেশ নিয়ে গেছে।

এক ব্রিফিংয়ে কেনেথ ম্যাকেঞ্জি সাংবাদিকদের বলেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়েছে ঘোষণা করতে আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি। আজ রাতের এ প্রত্যাহার শুধু সেনা প্রত্যাহারই নয় বরং এটি প্রায় ২০ বছর ধরে চলা যুদ্ধেরও সমাপ্তি, যে যুদ্ধ আফগানিস্তানে ২০০১ সালের ১ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছিল।

গত এপ্রিলেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে ৩১ আগস্টের মধ্যে সৈন্য পুরোপুরি প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী সৈন্য প্রত্যাহার শেষ করল মার্কিনিরা।

এদিকে বিদেশি সেনারা যেতে না যেতেই তালেবানের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের আফগান শাখা (আইএস-কে)। গত বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে আইএস-কে জঙ্গির আত্মঘাতী হামলায় অন্তত ১৭৫ জনের মৃত্যু হয়। এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ এবং যুক্তরাজ্যের দুই সামরিক সদস্য রয়েছেন। এরপর গত রবিবারও বিস্ফোরক পদার্থবোঝাই গাড়ি নিয়ে বিমানবন্দরের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল আইএস-কে জঙ্গিরা। তবে মার্কিন ড্রোন হামলায় তাদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এরপর গতকাল সকালে রকেট হামলা চালানো হয় কাবুল বিমানবন্দরে। তবে রকেট হামলা কারা চালিয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রকেট হামলার পরও তাদের আফগানিস্তান ছাড়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। তালেবানের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিমানবন্দর লক্ষ্য করে মোট পাঁচটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়। কিন্তু বিমানবন্দরের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।