বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক

সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় না খুললে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে প্রতীকী ক্লাস

সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়াসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। আজ মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো উত্থাপন করা হয়।

এতে মূল বক্তব্য পড়েন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাইদুল ইসলাম। সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গীতি আরা নাসরীন।

আলোচনায় অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল হাসান মামুন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আরাফাত রহমান।

উপস্থিত ছিলেন মানস চৌধুরী, রবিউল আলম, ফাতেমা সুলতানা শুভ্রা, তপন মাহমুদ লিমন, বখতিয়ার আহমেদ, মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, সামিনা লুৎফা, রুশাদ ফরিদী ও সৌভিক রেজা।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের ১১ দফা দাবি হলো— সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। তা না হলে প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচি হিসেবে শিক্ষকরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতীকী ক্লাস নেওয়া শুরু করবেন।

আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দিতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে কারণে প্রথম থেকেই পূর্ণ কার্যক্রম শুরু করা ঝুঁকিপূর্ণ, তাই আবাসিক হলে প্রথমে শুধু অনার্স এবং মাস্টার্সের শিক্ষার্থী যারা শিক্ষা জীবনের শেষের দিকে রয়েছে তাদের ওঠার অনুমতি থাকবে।

তারা বলেন, আবাসিক হলে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত না করে কোনোভাবে এসব শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার নেওয়ার কোনো ধরনের কার্যক্রম শুরু করা যাবে না। এসব ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা কার্যক্রম শেষ হয়ে গেলে পরবর্তী ব্যাচগুলোর ধাপে ধাপে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে।

দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে— ভবিষ্যতে যেন কোনো আবাসিক হলে গণরুম নামে কোনো ব্যবস্থা থাকে সে জন্য এখনই কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টেস্ট এবং টিকাদানের ব্যবস্থা করতে হবে; ক্যাম্পাসগুলোতে অবস্থিত মেডিকেল সেন্টারগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইসোলেশনের ব্যবস্থা, অসুস্থ হলে শিক্ষার্থীদের পরিচর্যার ব্যবস্থা নিতে হবে; পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ার পরে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত পাঠদান কার্যক্রম শুরু করতে হবে। তবে এখানেও করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ৫০ শতাংশ অনলাইনে এবং ৫০ শতাংশ অফ লাইন ক্লাস চালু করা যেতে পারে।

এ ছাড়া, যেসব শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে পারবে তারা সশরীর ক্লাস করবে। যারা পারবে না তারা অনলাইন ক্লাসে অংশ নেবে। শিক্ষকদের অনলাইন টিচিং-লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তৈরির জন্য প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা কমিটি ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রচুর মানুষ গুরুতর মানসিক ব্যাধিতে ভুগছেন। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। অনলাইনে সুষ্ঠুভাবে পড়াশোনা চালিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্পমূল্যে দ্রুত গতির ইন্টারনেট সার্ভিসের বিশেষ প্যাকেজ ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

শিক্ষক নেটওয়ার্কের ১১তম দাবি হলো, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে তাদের শিক্ষায় ফিরিয়ে আনার সেফটি নেটের ব্যবস্থা করতে হবে।