করোনায় বেকার ৪৮ ভাগ মানুষ, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ৮৩ শতাংশ

করোনায় বেকার ৪৮ ভাগ মানুষ, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ৮৩ শতাংশ
করোনায় বেকার ৪৮ ভাগ মানুষ, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ৮৩ শতাংশ

করোনাভাইরাসের কারণে দেশের ৮২ দশমিক ৭৮ শতাংশ মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে আয় কমেছে ৭৬ শতাংশ পরিবারের। বেকার হয়েছেন ৪৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ পরিবারের অন্তত একজন। গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশব্যাপী পরিচালিত একটি জরিপে এসব তথ্য উঠে আসে।

‘দ্রুত গৃহস্থালি পরিষেবা বিশ্লেষণ ২০২০’ নামক জরিপটি তত্ত্বাবধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট প্ল্যাটফর্ম ফরমাল রিকগনিশন অব দ্যা উইমেন্স আনকাউন্টেড ওয়ার্ক। নারী অধিকার নিয়ে সোচ্চার ফোরামটির সদস্য সংস্থাগুলো হচ্ছে- অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংস্থা, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ, অক্সফাম ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।

জরিপের নেতৃত্বে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরমিন্দ নিলোমী। সম্প্রতি এক অনলাইন ওয়েবিনারে জরিপটি প্রকাশ করা হয়। জরিপে মানসিক স্বাস্থ্য, বেকারত্ব ও দারিদ্র্যের হার, নারী আয়, নারী সহিংসতা, শিশুশিক্ষা, অনলাইন শ্রেণি কার্যক্রম, সামাজিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়।

এতে বলা হয়, গ্রামের নারীদের ৫০ শতাংশই মানসিকভাবে দুর্বল, ২০ শতাংশ বিপর্যস্ত। শহরের ২৩ শতাংশ নারী মানসিকভাবে ‘খুবই’ দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। এ ছাড়া গ্রামের ৯৭ শতাংশ ও শহরের ৮৮ শতাংশ নারী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সংসারে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় অধিকাংশ নারীর ঘুম, ওজন, শরীর ও মানসিক বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা বেড়েছে।

মহামারিতে পুরুষের তুলনায় নারীর সম্পত্তি বেশি বিক্রি করা হয়েছে। তাঁদের ঘরের কাজ কয়েক গুণ বেড়েছে। ৮৫ শতাংশ শহুরে নারীর গৃহস্থালিতে অংশগ্রহণ ১২৮ শতাংশ বেড়েছে। তাদের করোনাপূর্ব সাংসারিক কাজ ৩-৫ ঘণ্টা হলেও মহামারিতে ৭-৮ ঘণ্টা করতে হচ্ছে।

জরিপে দাবি করা হয়, মহামারিতে নারীদের শ্রম, পরিবার ও রাষ্ট্র যথাযথ মূল্যায়ন করছে না। করোনায় মোট ৭৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেকার হয়েছেন। গ্রামে বেকার হয়েছেন ৯২ দশমিক ৫ শতাংশ। শহরের অস্থায়ী বেকার বাসিন্দারা গ্রামে ফ্রিলেও কাজ পাননি। সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা পেয়েছেন মাত্র ২২ দশমিক ৯৭ শতাংশ শহরের মানুষ শ্রমজীবীরা বেশি আর্থিক সংকটে পড়েছেন।

অনলাইন শিক্ষার বিষয়ে বলা হয়, ৩৪ দশমিক ৪ শতাংশ মা সন্তানকে অনলাইনে ক্লাস করতে সহযোগিতা করেন। গ্রামে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ বাবা টিভির মাধ্যমে সন্তানকে পড়ালেখা করতে সাহায্য করেন।

জরিপ নিয়ে অধ্যাপক নিলোমী গণমাধ্যমকে বলেন, জরিপে বাংলাদেশের এনজিও সংস্থাগুলোর মতো সুবিধাজনক তথ্য নেওয়া হয়নি। প্রত্যক্ষ সাক্ষাৎকার ও ফোনের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও শহরের নাগরিকেরা এ জরিপে অংশ নেন। এতে ৩৮টি ক্ষেত্রে সমস্যা সমাধানের সুপারিশ করা হয়েছে।