দড়ি লাফিয়ে গিনেস বুকে কলেজছাত্র রাসেল

রাসেল ইসলাম
রাসেল ইসলাম

দড়ি লাফিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখালেন ঠাকুরগাঁওয়ের তরুণ রাসেল ইসলাম। জেলা সদরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই ছেলেটি বিশ্বরেকর্ড গড়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন।

জানা গেছে, দড়ি লাফের ওপর দুটি বিষয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ২০১৯ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আবেদন করেন রাসেল। তার একটি ছিল, ৩০ সেকেন্ডে এক পায়ে কতবার লাফাতে পারেন তিনি। অন্যটি ছিল এক মিনিটের। দুটিতেই নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন রাসেল।

এর আগে, এক পায়ে ৩০ সেকেন্ডে ১৪৪ বার লাফানোর রেকর্ড ছিল। রাসেল লাফিয়েছেন ১৪৫ বার। আর এক মিনিটে এক পায়ে ২৫৮ বার লাফিয়ে আগের ২৫৬ বার লাফানোর বিশ্বরেকর্ডটিও ভেঙে দেন তিনি। গত ২৯ জুলাই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সনদপত্র হাতে পেয়েছেন রাসেল। রাসেল ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের হরিহরপুর গ্রামের সিরজাপাড়া গ্রামের দিনমজুর বজলুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে পড়াশোনা করছেন।

২০১৮ সালে মথুরাপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের হয়ে প্রতিযেগিতায় উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও উপ-অঞ্চল পর্যায়ে সেরা হয়েছিলেন রাসেল। স্থানীয়রা জানান, প্রত্যন্ত এলাকার ছেলেটি বিশ্বরেকর্ড গড়বে- এমনটি তারা স্বপ্নেও ভাবেননি। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলা বেশি পছন্দ রাসেলের। সময় পেলেই দড়ি নিয়ে লাফালাফি করতেন। এ জন্য গালমন্দ শুনতে হয়েছে তাকে। তবে ছেলের ইচ্ছার বিরোধিতা করেননি বাবা। সহযোগিতা করেছেন তিনি।

রহিমানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান হান্নু বলেন, রাসেল শুধু রহিমানপুর আর ঠাকুরগাঁওয়ের গর্ব নয়, সে এখন দেশের গর্ব। অন্য জেলা থেকেও লোকজন রাসেলকে দেখতে যাচ্ছেন। ছেলেটি গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করেছে বিশ্বদরবারে।

এ বিষয়ে রাসেল ইসলাম বলেন, ইন্টারনেটে দড়ি লাফের ওপর ভিডিও দেখতাম, বিশরেকর্ডে নজরে রাখতাম। স্বপ্ন দেখতাম সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ার। নিজেকে প্রস্তুত করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করি। তিন মাস পরে কিছু গাইডলাইনসহ একটি রিপ্লাই দেওয়া হয়। তারা তাদের নিয়মমতো কিছু ভিডিও চান। মনোযোগ দিয়ে সেই কাজগুলো করে তাদের পঠিয়ে দেই। এই স্বীকৃতির জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। আমার আরও অন্য বিষয়ে রেকর্ড ভাঙার ইচ্ছা রয়েছে।

রাসেলের বাবা বজলুর রহমান বলেন, সরকারি সহায়তা পেলে রাসেল আরও ভালো কিছু করতে পারবে।

জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাসেলকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। তাকে সরকারি সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হবে যেন সে আরও ভালো কিছু আমাদের উপহার দিতে পারে।