ন্যূনতম মূল্যায়নে উত্তীর্ণ হোক সব শিক্ষার্থী

কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম
কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম

করোনার কারণে গতবছর এইচএসসি তে অটোপাশ দেওয়া হয়। প্রাথমিক, জুনিয়রসহ সব শ্রেণিতেই একই পদ্ধতি অনুসরণ করে অটোপ্রমোশন দেওয়া হয়েছিল। এ বছরের পরীক্ষাগুলোও অনিশ্চয়তায়! করোনার ভয়াবহতা এবার আরো প্রকট।

যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবার অটোপাশ বা অটোপ্রমোশনে রাজী নয়। তাছাড়া, অনলাইন ক্লাশের পাশাপাশি প্রাথমিকে বাড়ীর কাজ, মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকে এ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ব্যতিব্যস্ত রাখা হচ্ছে।

যেহেতু স্কুল, কলেজ খোলার কোন তারিখ সুনির্দিষ্ট হচ্ছেনা সেহেতু করোনা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি সাপেক্ষে সব শ্রেণিতেই নূন্যতম মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরবর্তি শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা যায় বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করছি। এমনিতে গতবছরও শিক্ষার্থীরা মূল্যায়নবঞ্চিত থেকেছে।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ হয়তো বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এটা হতেই পারে। তবে মেধাবি শিক্ষার্থীদের কথাও মাথায় রাখা দরকার বলে মনে করি। দেখা গেছে, বহু মেধাবি শিক্ষার্থী করোনাকালেও যতটুকু পেরেছে তাদের পড়ালেখা চালিয়ে গেছে। নিয়মিত অনলাইন ও টিভির ক্লাশগুলোতে অংশ নিয়েছে।

এখন একেবারে পরীক্ষা না হলে বা কোন ধরনের মূল্যায়নের ব্যবস্থা না থাকলে তারা হতাশ হবে। সেজন্য মনে করি, অন্তত মূল্যায়নটা তাদের ক্ষেত্রে হওয়াটা প্রয়োজন অথবা সব শিক্ষার্থী উপযোগী মূল্যায়ন হোক। শিক্ষাবর্ষ কমিয়ে, শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করে হলেও নূন্যতম মূল্যায়ন হোক। সব ধরণের ভর্তিতেও একই ব্যবস্থা করা হোক।

এটা অবশ্যই সঠিক, করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী শিক্ষাব্যবস্থায় বিপর্যয় ঘটেছে। তছনছ হয়েছে সবকিছু। এরপরও সীমাবদ্ধতার মাঝে যতটুকু সম্ভব করতে পারলে সেটাই হবে স্বার্থকতা।

শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিতে না ফেলেও কীভাবে সকল শিক্ষার্থীকে মূল্যায়নের মাধ্যমে উত্তীর্ণ করা যায় তা বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদদের সাথে বসে আলোচনার ভিত্তিতে একটা উপায় বের করা যেতে পারে। নূন্যতম একটা মূল্যায়ন হওয়াটা সময়ের দাবি। প্রাথমিক, মাধ্যমিকসহ সকল শিক্ষাব্যবস্থা আগের অবস্থায় ফিরুক, করোনামুক্ত হয়ে স্বস্তি আসুক গোটা বিশ্বে।

লেখক: শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক