৪৫ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর নামে পশু কোরবানি করছেন লতিফ

৪৫ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর নামে পশু কোরবানি করছেন লতিফ
৪৫ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর নামে পশু কোরবানি করছেন লতিফ

দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে পশু কোরবানি করছেন সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর থেকেই তিনি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে কোরবানি চালু রেখেছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ। বেলকুচির কামারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তিনি। ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে উঠে আসা এ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান থেকে হয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।

লতিফ বিশ্বাসের স্ত্রী বেলকুচি পৌরসভার সাবেক মেয়র বেগম আশানূর বিশ্বাস জানান, লতিফ বিশ্বাস ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার খবর শুনে প্রতিবাদমুখর হন। ফলে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামি হয়ে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও রংপুর জেলে কারাবাস করেন। পরবর্তীতে রংপুর স্পেশাল মার্শাল ল’ কোর্টে বিচারের সম্মুখীন হয়ে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে খালাস পান। এরপর মূল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।

তিনি বলেন, ১৯৭৬ সালে যখন লতিফ বিশ্বাস জেলহাজতে কারারুদ্ধ, তখন আমাকে বঙ্গবন্ধুর নামে তার পরিবারের শহীদ সদস্যের আত্মার শান্তি কামনা করে পশু কোরবানি দিতে বলেছিলেন। আমি তখন হাজার টাকা দিয়ে একটি মাঝারি আকারের ষাঁড় কিনে কোরবানি দেই। এরপর থেকে তিনি নিজেই জাতির পিতার নামে ষাঁড় কোরবানির এ প্রথা অব্যাহত রেখেছেন।

তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানির জন্য বড় তিনটি ষাঁড় বাড়িতে বেঁধে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দুই লাখ টাকায় কেনা লতিফ বিশ্বাসের পশুটি অতীতের ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও তার নামে কোরবানি করা হবে। ঈদের দিন কোরবানি করা এ পশুর মাংস পাঁচ শতাংশ রেখে বাকি ৯৫ শতাংশ এলাকার অসহায় মানুষদের মাঝে বিতরণ করেন তিনি।

আব্দুল লতিফ জানান, বিষয়টি অনেকটা গোপনেই ছিল। হঠাৎ মুখ থেকে বের হয়েছে। আসলে জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়েই জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। তার ঋণ আমরা জাতি হিসেবে কখনো শোধ করতে পারবো না। তাই তাদের জন্য এ আমার এক ছোট্ট ভালোবাসা।