রাবির আরবী বিভাগে পরীক্ষার ১৮ মাস পরও ফল প্রকাশিত হয়নি

রাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৮ মাস পেরিয়ে গেলেও প্রকাশিত হয়নি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের প্রথম বর্ষের ফলাফল। দ্বিতীয় বর্ষের অনলাইন ক্লাস চালু থাকলেও ফলাফল না পাওয়ার কারণে ভর্তি হতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। দ্রুত পরীক্ষার ফলাফলের দাবি জানিয়েছেন তারা।

তবে বিভাগ বলছে, ওই বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতির তৎপরতার অভাবে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। 

জানা যায়, ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে আরবী বিভাগে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন ১২০ শিক্ষার্থী। ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসেন ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বরে। ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর শেষ হয় মৌখিক পরীক্ষাও। কিন্তু এর মধ্যেই পেরিয়ে গেছে দেড় বছর। তবুও শিক্ষার্থীরা পায়নি পরীক্ষার ফলাফল। ফলে সব মিলিয়ে ফলাফল না পাওয়া শিক্ষার্থীরা প্রথম বর্ষেই আটকে আছে আড়াই বছর ধরে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, অভিভাবকেরা প্রায়ই ফলাফলের বিষয়ে জানতে চান। কোন বর্ষে পড়ছি, সে বিষয়েও জানতে চায়। কিন্তু রেজাল্ট না হওয়ায় তা জানাতে পারছি না। গত দেড় বছরে ফলাফল না পেয়ে পরবর্তী বর্ষের জন্যও পড়তে পারছি না। যেকোনো সময় বিশ্ববিদ্যালয় খুলে গেলে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় বসতে হবে। কিন্তু প্রথম বর্ষের ফলাফল আগে পেলে দ্বিতীয় বর্ষে জন্য ভালো প্রস্তুতি নেয়া যেতো। গত আড়াই বছরে প্রথম বর্ষেই পড়ে আছি। অন্তত ফলাফলটা দ্রুত সময়ে পেলে বলতে পারতাম দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছি। তাই দ্রুত পরীক্ষার ফলাফল চাই।

অনলআইন ক্লাসের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত দেড় বছরে অনলাইনে সব মিলিয়ে ২০টির বেশি ক্লাস হয়নি। দ্বিতীয় বর্ষে সাতটি কোর্সের ১৪ জনের শিক্ষকের মধ্যে মাত্র ৫-৬ জন শিক্ষক কয়েক দিন অনলাইনে ক্লাস নিয়েছেন। এর ফলে গত দেড় বছরে শিক্ষকদের কাছ থেকে ফলাফলের পাশাপাশি ক্লাসও করতে পারিনি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের বিভাগের সব কয়টি বর্ষের ফলাফল প্রকাশিত হলেও প্রথম বর্ষের ফলাফল গত দেড় বছরেও দিতে পারেনি শিক্ষকরা।

ফলাফল চাইতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা জানতে পারে, প্রথম বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আবু বকর সিদ্দীক। তিনি বিভাগের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। তিনি ফলাফল বিষয়ে তেমন তৎপর নন। এর জন্য পরীক্ষার ফলাফল আটকে আছে। তিনি সক্রিয় হলেই ফলাফল দেয়া যাবে।

আরবী বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. নিজাম উদ্দীন বলেন, ফলাফলের সবকিছুই কমপ্লিট। প্রথম বর্ষের এই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আবু বকর সিদ্দীক। তিনি এবিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

অনলাইন ক্লাসের বিষয়ে তিনি বলেন, অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। তবে সেভাবে হচ্ছে না। দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক রয়েছেন, তারা অনলাইনের ক্লাস বিষয়ে খুব বেশি অভ্যস্থ নন। আর এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও প্রথম দিকে বলা হয়েছে, যারা অনলাইনে ক্লাস নিতে চান, তারা করবেন। যারা করবেন না, তারা চেষ্টা করবেন।

পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আবু বকর সিদ্দীককে পরীক্ষার ফলাফল বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন (অধিকর্তা) অধ্যাপক মো. ফজলুল হক বলেন, পরীক্ষা যদি হয়ে থাকে, যেকোনো পরিস্থিতিতে ফলাফল হতে পারে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ থাকলেও অফিসগুলো তো চালুই আছে। এত দিন ফলাফল আটকে রাখা ঠিক হয়নি।