ডকুমেন্টমগুলো রোজিনার কাছ থেকে নয় বরং সরকারি কর্মকর্তা উপস্থাপন করেছেন: আইনজীবী

আটক
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহারে যে ডকুমেন্টের কথা বলা হয়েছে, তার কোনো বর্ণনা এজাহারে নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। তিনি বলেন, যে জব্দ তালিকা আদালতে হাজির করা হয়েছে তাতে দেখা গেছে, ডকুমেন্টমগুলো অভিযুক্ত রোজিনার কাছ থেকে নয় বরং একজন সরকারি কর্মকর্তা নিজেই উপস্থাপন করেছেন। তাই যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা মানহানিকর এবং আপত্তিকর বলে জানান তিনি।

আজ মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন প্রথম আলোর নিয়োজিত আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। শুনানির পর তিনি এ কথা বলেন।

আদালতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। শুনানির পরে আদালত তার রিমান্ড নাকচ করেন। তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। আগামী বৃহস্পতিবার তার জামিনের শুনানি হতে পারে।

আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘এই মামলার ৩৭৯ ধারাকে যদি বিশ্বাস করতে হয়, তাহলে ৩৭৯ ধারার উপাদান হচ্ছে, যেকোনো বিষয়বস্তু চুরি করার ক্ষেত্র প্রকাশ্য স্থানে, উন্মুক্ত স্থানে হতে হবে। আর প্রসিকিউশনের অভিযোগ অনুযায়ী, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ১৯২৩ অনুযায়ী যদি বিশ্বাস করেন, তবে কথিতমতে ঘটনাস্থলটি হচ্ছে সচিবালয়। সুতরাং পরস্পর বিরোধপূর্ণ দুটি ধারা বিজ্ঞ আদালতের কাছে সন্দেহের উদ্রেক করে যে প্রকৃতপক্ষে ঘটনাস্থলটি কোথায়? আদৌ এই ঘটনা ঘটেছিল কি না?’

আইনজীবী আরও বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম তার মহান পেশার দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই সচিবালয়ে গিয়েছিলেন। তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি আজ পরিস্থিতির শিকার।

আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযোগ ও প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের রিমান্ড মঞ্জুরের যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। আদালত এই বক্তব্য বিবেচনায় নিয়েছেন এবং তা বিবেচনায় নিয়ে রিমান্ডের আবেদন নাকচ করেছেন।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিনের বিষয়ে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, সেকশন ৩-এর কোনো ইনগ্রিডিয়েন্স নেই। অন্য যেসব অভিযোগ রয়েছে, তা আইন অনুযায়ী জামিনযোগ্য। এ ক্ষেত্রে জামিন পাওয়াটা আমার অধিকার। যথেষ্ট সময় নিয়ে বক্তব্য শোনার জন্য তিনি আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, আদালত জামিনের বিষয়টি অনিষ্পন্ন রেখে মৌখিকভাবে বলেছেন, পরে এ নিয়ে শুনানি হবে। আমরা মৌখিকভাবে আদালতকে বলেছি, জামিনের শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার হোক।

রোজিনা তাকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার কোনো আবেদন করেছেন কি না— এ প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী বলেন, শুনানি শেষে একটি আবেদন করা হয়েছে। সেই আবেদনের ওপর লিখিত কোনো আদেশ এখনো আসেনি। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আদালত আবেদনটি বিবেচনায় নেবেন।

নির্যাতনের বিষয়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের কাছ থেকে তার বক্তব্য শুনে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।