করোনাকালীন ঈদ

যেমন কাটল শিক্ষার্থীদের ঈদ

ফাহাদ, এশা, ফাহাদ ও অধরা
মো. ফাহাদ বিন সাঈদ (বাম থেকে), সাফরীণ এশা, মো. ফাহাদ হোসেন ও অধরা জামান লাবনী

উৎসবের খুশি যেন প্রাণে জাগ্রত হাসি। একমাসের  রোজা শেষে যখন এমন একটা উৎসবের দিন আসে তখন তা আর ধরে রাখা যায় না। কিন্তু, দুইবছর ধরে করোনা মহামারি জীবন থেকে সব আনন্দ যেন ম্লান করে দিচ্ছে। তবুও উৎসব প্রিয় বাঙালিকে দমিয়ে রাখা যায় না। এক্ষেত্রে দীর্ঘ ছুটির ফাঁদে ঈদের আনন্দ ঘরবন্দি শিক্ষার্থীদের জন্যই মনে হয় বেশি উদ্দীপনার। তাদের এই ঈদ উদযাপনের চিত্র তুলে ধরেছেন তানভীর আহম্মেদ-

‘এবারের ঈদের দিনটি আমার কাছে সম্পূর্ণ আলাদা। কারণঃ এবারের ঈদ জুম্মার দিনেই হয়েছে। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পুরো এক মাস সিয়াম সাধনা করে আর তারপর আসে ঈদ।
তাই দিনটিকে নিয়ে সবার মধ্যেই কিছু চিন্তাধারা, পরিকল্পনা কাজ করে। চিন্তা পরিকল্পনা একে অপরের থেকে ভিন্ন হলেও উদ্দেশ্য একটাই, আনন্দের সাথে দিনটিকে উপভোগ করা। আমার কাছে ঈদ মানে হলো আপনজনের ঘরে ফেরার গল্প, সকলের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করার গল্প। ধনী-গরীব, ছোট-বড় সকলের সাথে ঈদের আনন্দ শেয়ার করা।

আলহামদুলিল্লাহ এই ঈদে গ্রামের সকলের সাথে ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়তে পেরেছি। পাশাপাশি গ্রামের সেচ্ছাসেবা সংগঠনের সাথে থাকায় ঈদগাহ ও মসজিদের সেবামূলক ও সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। তবে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বদলে দিয়েছে ঈদের সেই চিরচেনা আমেজ। অনলাইনে বন্ধুদের সাথে ঈদের সৌহার্দ্য বিনিময় করেছি। এ পরিস্থিতিতে আমাদের উচিত সবার পাশে থাকা। যথাসম্ভব নিজের অবস্থান থেকে অন্যকে সাহায্য করা। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, পৃথিবী যেন তার আগের চিরচেনা রূপে খুব শীঘ্রই ফিরে আসে।

মো. ফাহাদ বিন সাঈদ
ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

.

‘বছর ঘুরে খুশির বার্তা নিয়ে আবারও এলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। কিন্তু, গতবারের মতো এবারও এক সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে ঈদের আগমন তাই বিশেষ এই উৎসবে বেড়াতে যাওয়া, খাওয়া-দাওয়া আর সবার থেকে সালামি আদায় করাটাও ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। লকডাউনের জন্য এবার একদমই বাইরে বের হওয়া হয়নি। বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ আড্ডা সবই হলো ফোনে। এক্ষেত্রে কিন্তু, ব্যস্ততা ভালোই ছিল। তবে, এবারের ঈদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ছিল আম্মুকে ছুটি দিয়ে নিজেই রান্না আর ঘরের সমস্ত কাজ সেরে ফেলা। যৌথ পরিবারে বেড়ে ওঠার কারণে এবারের ঈদ কেটেছে সম্পূর্ণ পারিবারিক আনন্দ উপভোগের মধ্য দিয়ে। অনেক বছর পর সব ভাই-বোন আত্মীয়স্বজন এভাবে ঘরে থেকে ঈদ পালন করেছি। এই সোনালী সময়টা করোনা না থাকলে হয়তো পেতাম না। যাই হোক, এখন যেহেতু মহামারি সময় তাই সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, সাবধানে থাকুন।

সাফরীণ এশা
ফার্মেসী বিভাগ
গণ বিশ্ববিদ্যালয়

.

‘বিশ্বজুড়ে চলছে করোনার মহামারির  রাজত্ব। কিছুটা অস্বাভাবিকতার ছোঁয়ায় এলোমেলো মানুষের স্বাভাবিক জীবনের গতিপথ। করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) দাপটে মানুষ যখন প্রিয়জন হারানোর শোকে ব্যথিত ঠিক তখনি খুশির বার্তা নিয়ে উপস্থিত মুসলিম জগতের সবচেয়ে আনন্দের দিন পবিত্র ঈদুল ফিতর। কিন্তু  ব্যতিক্রমভাবেই উদযাপিত হয়েছে এবারের করোনাকালীন ঈদ। এবার চেষ্টা করেছি পরিবার ও আত্নীয়স্বজনের সাথে ঈদের খুশির মুহুর্তগুলো ভাগাভাগি করে নিতে। অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ব্যবহার করে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি ঈদের শুভেচ্ছা। অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র ও ব্যাচমেটদের থেকে ঈদ সালামি আদায় ও দেওয়ার  মিষ্টি আবদারগুলো এবারের ঈদে যোগ করেছে অন্যমাত্রা। ধরনী আবার সুস্থ হয়ে উঠুক। সুন্দর ও সুস্থ পৃথিবীতে আবারো আসুক ঈদ। মেতে উঠুক সবাই ঈদের আনন্দে।

মো. ফাহাদ হোসেন
অর্থনীতি বিভাগ
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

.

‘বছর ঘুরে আবার এলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। এবারের ঈদও গত বারের মতো লকডাউনে বন্দি। কিন্তু এর মাঝেই অনেকে খুঁজে নিয়েছেন ঈদের আনন্দ। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। আমার ঈদ আনন্দ শুরু হয় চাঁদ রাত থেকে। সবাইকে ঈদ মোবারক জানানো, ঈদের দিনের প্রস্তুতি নেওয়া এগুলোর মাঝেই সময় কাটে। চাঁদ রাত মানেই হাত রাঙ্গানো। মেহেদির বাহারি নকশা শোভা পায় হাতে। ঈদের দিনটি শুরু হয় বাবার ফোন কলের মাধ্যমে। একে অপরকে ঈদ মোবারক জানানোর মাধ্যমে দিনটি শুরু হয়। আর অন্য দিকে মা খাবারের আয়োজন করেন। সাথে আমিও একটু হাত লাগাই। রান্না শেষ করে গোসল করে নতুন শাড়ি পড়া। যেহেতু ঘরে বন্দি সেহেতু বন্ধুদের সাথে ফোনে কথা বলাই হলো ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করার একমাত্র উপায়। টিভিতে চলে নানা ধরনের অনুষ্ঠান। বর্তমানের আরেকটি ট্রেন্ড হলো ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করা। আমিও তার ব্যতীক্রম নই। শাড়ি, চুড়ি, সাজুগুজু করে ছবি তুলে নিজ ঈদ আনন্দ সকলের শেয়ার করা।এভাবেই কাটে আমার ঈদ। ঈদের আনন্দ ঘরে ঘরে, নিরাপদে থাকি সকলে।

অধরা জামান লাবনী
বায়োটেকনোলজি বিভাগ
ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়