বিদায়ের দু’দিন আগেও ‘অবৈধ নিয়োগ’ দিতে চান রাবি উপাচার্য!

রাবি উপাচার্য
উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও শেষ বেলায় এসে পছন্দের প্রার্থীদের অ্যাডহকে চাকরি দিতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান। নিয়ম বহির্ভূত এসব নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টিও জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকরা। নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও উপাচার্যের নতুন নিয়োগ চেষ্টা নিয়ে বিভিন্ন মহলে উঠেছে প্রশ্ন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,  ২০০৯ সালে প্রথম মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যে মেতে ওঠেন অধ্যাপক সোবহান। নিয়মের বাইরে গিয়ে সে সময় ৩৩০ জন শিক্ষক নিয়োগ দেন। এর মধ্যে অস্থায়ীভাবে ৯৫ জন এবং সাতজন এডহকে। এ ছাড়া ৩৪৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীও নিয়োগ দেন উপাচার্য।

এরপর  ২০১৭ সালের ৭ মে দ্বিতীয়বারের মতো উপাচার্য পদে নিয়োগ পান অধ্যাপক আব্দুস সোবহান। দায়িত্ব নেওয়ার বেশ কিছুদিন পর তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে যোগ্যতা শিথিল করে মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ, রাষ্ট্রপতিকে অসত্য তথ্য দেওয়া, প্রশাসনিক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি উল্লেখযোগ্য।

অভিযোগ তদন্তে নেমে ২৫টি অনিয়ম-দুর্নীতির সত্যতাও পায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১০ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে সব ধরনের নিয়োগ বন্ধ রাখাসহ বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে রাবি উপাচার্যকে চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে নিষেধাজ্ঞার পরও শেষ মুহূর্তে সেকশন অফিসার থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদে কমপক্ষে ১০০ জনকে গোপনে নিয়োগ দিতে উপাচার্য চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম টিপু বলেন, কেন তাঁকে নিষেধাজ্ঞার পরও নিয়োগ দিতে হবে? তিনি কি কোনো কারণে দায়বদ্ধ? মূলত ব্যক্তিগত প্রত্যাশা পূরণ ও লাভবান হওয়ার জন্যই শেষ মুহূর্তেও উপাচার্য নিয়োগ দিতে তৎপর বলে মন্তব্য করেন তিনি।’

এদিকে, এর আগে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ায় তিনি যেন আর কোনো ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারেন, সে জন্য সিনেট ও দুটি প্রশাসন ভবন দ্বিতীয় দিনের মতো তালাবদ্ধ করে রেখেছেন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরা।

সার্বিক বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে কোনো ধরনের নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ নেই। আমরা এ ব্যাপারে নিয়মিতই খোঁজখবর রাখছি। কোনো ধরনের অনিয়ম পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’