শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত, এবার যাবে মন্ত্রিপরিষদে

শিক্ষা আইন
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, এবার এটি মন্ত্রিপরিষদে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। সোমবার (৩ মে) শহীদ জননী জাহানারা ইমামের জন্মদিন উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এ কথা জানান তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষা আইন দীর্ঘ দিনেও চেষ্টা করে করা যায়নি। এখন সেটি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের দিক থেকে আমরা চূড়ান্ত করেছি। এটি মন্ত্রিপরিষদে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। শিক্ষা আইনটি হলে শিক্ষার ক্ষেত্রে যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে, সেগুলো আমরা কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো।

তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টায় শিক্ষাকে মূল হাতিয়ার ভাবছি আমরা। বঙ্গবন্ধুর যে শিক্ষা ভাবনা ছিল, তার গঠিত ড. কুদরত-ই-খোদা শিক্ষা কমিশনের যে শিক্ষা আমরা পাই, তার আলোকে ২০১০ সালে আমরা যে শিক্ষানীতি করেছি, তা অনুসরণ করার চেষ্টা করছি। এর বিপরীতে শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি অংশ বিশেষত কওমি শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

“কওমিদের যে কর্মকাণ্ড— সেগুলো সকল আলোচকের মাধ্যমে উঠে এসেছে। একদিকে দেশটিকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আরেক দিকে একটি চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। সেই কাজের জন্য বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসাগুলোর শিশুদের ব্যবহার করা হচ্ছে। সন্ত্রাসে-জঙ্গিবাদে শিশুদের যুক্ত করা হচ্ছে। নারী, শিশু, কিংবা ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিদ্বেষী, আমাদের জাতীয় চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বিদ্বেষী করে শিক্ষার্থীদের তৈরি করা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো খুবই উদ্বেগজনক।”

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যেকোনও শিক্ষাই হোক, সেখানে যদি মানবিকতার শিক্ষা না দেওয়া হয়, সমাজ সম্পর্কে শেখানো না হয়, দেশের প্রতি ভালোবাসা না শেখানো হয়, শিক্ষার্থীরা পরমতসহিষ্ণুতা যদি না শেখে, তাহলে তাকে শিক্ষা বলা যায় না। কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে চালাবেন, তার চেয়ে বড় হচ্ছে— এই বিষয়গুলো অবশ্যই থাকতে হবে।

শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন অবশ্যই করবো এবং সেই পরিবর্তনের জন্য আমরা কাজ করছি। কাজ করছি বলেই নতুন কারিকুলামের পুরো ভিত্তিই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মধ্য দিয়ে একটি জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র তৈরি করার মতো মানুষ তৈরি করতে চাই। শিক্ষিত বেকার চাই না।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন ঘাতক দালাল নির্মূল কামিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির। এছাড়া অধ্যাপক মাহফুজা খানম, ড. মুজিবুর দফতরি, আনসার আহমেদ উল্লাহ, সাব্বির খান, মমতাজ লতিফ, ইকরাম চৌধুরী, হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতারা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

প্রসঙ্গত, রবিবার (২ মে) শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে বৈঠক করেন। ওইদিনই ভার্চুয়াল সভায় শিক্ষা আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হয় বলে জানা গেছে।