এসএসসি-এইচএসসিতে আর ‘অটো পাস’ নয়

অটো পাস
এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষা

গত বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন, যাদের সবাই পাস করেছেন। করোনার প্রাদুর্ভাব না কমায় জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে এই ফল প্রকাশিত হয়েছিল।

তবে এবার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় গত বছরের মতো ‘অটো পাস’ পদ্ধতিতে ফলাফল না দিয়ে এই পাবলিক পরীক্ষা দুটি গ্রহণের পরিকল্পনা করছে সরকার। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করে কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এই দুটি পাবলিক পরীক্ষা আয়োজনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

সূত্র জানায়, সংক্ষিপ্ত সিলেবাস সম্পন্ন করেই পরীক্ষা দুটি নেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে। পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে বছরের শেষ দিকে হলেও দুটি পাবলিক পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আগামী ২৩ মে যদি স্কুল-কলেজ খোলা যায়, তাহলে সেপ্টেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন করা যেতে পারে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ৩০ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করে পরবর্তী দুই সপ্তাহ পর এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এসএসসি ও সমমানের জন্য ৬০ দিন এবং এইচএসসি ও সমমানের জন্য ৮৪ দিনে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস শেষ করতে হবে। এরপর দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে দুই পরীক্ষাই নেওয়া হবে। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ গত বছরের চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানো হয় আগামী ২২ মে পর্যন্ত।

সর্বশেষ ছুটির ঘোষণা অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে আগামী ২৩ মে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ৬০ দিনের সিলেবাস শেষ করতে সময় যাবে আগামী ২৩ জুলাই। এরপর দুই সপ্তাহ সময় দিয়ে পরীক্ষার রুটিন ঘোষণা করা হলেও আগস্ট মাসের শেষে কিংবা সেপ্টেম্বরের শুরুতে পরীক্ষা নিতে হবে। একইভাবে এইচএসসি পরীক্ষাও পিছিয়ে যাবে।

এদিকে, এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য প্রশ্নপত্র ছাপাসহ অন্যান্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। লকডাউনের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের কেউ বাকি থাকলে লকডাউনের পর তা সম্পন্ন করা হবে। 

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, এ বছর এসএসসি এবং এইচএসসি শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প পদ্ধতি অনুসরণ করব না। আমরা চাই না শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা ছাড়াই সার্টিফিকেট নিয়ে যাক। শিক্ষকদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে গুরুত্বের সাথে পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের বার্তা পৌঁছে দিতে বলা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এবছর সংক্ষিপ্ত পাঠ্যক্রমের উপর ভিত্তি করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু হলেই এসএসসি শিক্ষার্থীরা ৬০ দিন এবং এইচএসসি শিক্ষার্থীরা ৮০ দিনের জন্য ক্লাস করবে। পরবর্তীতে পাঠ্যক্রমের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পরীক্ষা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, ক্লাস সমাপ্তি এবং পরীক্ষা গ্রহণের মাঝে দুই সপ্তাহের ব্যবধান থাকতে পারে। আর যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনরায় চালু হতে এক বা দুই মাস দেরি হয় তাহলে পরীক্ষাও পিছিয়ে দেওয়া হবে। তবে ক্লাস চলবে।

উল্লেখ্য, গত বছর ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় তা বড়িয়ে আগামী ২২ মে পর্যন্ত প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়।