সিঙ্গাপুরে অভিবাসীদের ইংরেজি শিখিয়ে ফোর্বসের তালিকায় সাজ্জাদ

সাজ্জাদ হোসাইন

পরিবারের সঙ্গে ১১ বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান সাজ্জাদ হোসাইন। পরে ১৮ বছর বয়সে মূলত সাজ্জাদ হোসাইন সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত অভিবাসী কর্মীদের সাথে ওঠাবসা শুরু করেন। তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন।

সাজ্জাদের মনে হয়, কঠোর পরিশ্রম সত্ত্বেও ভাষাগত সমস্যার কারণে অনেক পিছিয়ে থাকতে হয় অভিবাসীদের। সেবছরই ব্যক্তিগতভাবে অভিবাসীদের ইংরেজি শেখাতে শুরু করেন। পরের বছর ২০১৩ সালে গড়ে তোলেন এসডিআই একাডেমি।

সমাজপরিবর্তনকারী এমন কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিশ্বখ্যাত মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের ষষ্ঠ বার্ষিক ‘থার্টি আন্ডার থার্টি এশিয়া’ তালিকায় নাম উঠে এসেছে সাজ্জাদ হোসাইনের। গত সোমবার (১৯ এপ্রিল) এশিয়ার ৩০ বছরের কম বয়সী উদ্যোক্তা ও সমাজ পরিবর্তনকারী (চেঞ্জমেকার) ৩০০ তরুণের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ফোর্বস। এবার প্রথমবারের মতো  বাংলাদেশি ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ৯ জন এই তালিকায় রয়েছেন।

ইংরেজি না পারার কারণে স্কুলে দুই শ্রেণি গচ্চ দিতে হয়েছিল বর্তমানে ২৭ বছর বয়সী সাজ্জাদকে। নিজের জীবন থেকেই ভাষাগত কারণে বাধার সম্মুখীন হয়ে যে শিক্ষা পান। তাই কাজে লাগাতে মনোযোগী হন তিনি।

সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে সাজ্জাদ বলেন, এটা আমাকে বুঝিয়ে দেয়, সুযোগসুবিধা পেতে বা সম্ভাবনা কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে ভাষা কতটা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। অভিবাসীদের অনেকে কর্মক্ষেত্রে নির্দেশনা বুঝতে পারেন না। এমনকি অনেকে তাদের নিরাপত্তা নীতিমালাগুলও বুঝতে পারেন না।

নিজের গড়া প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সাজ্জাদ বলেন, বর্তমানে আমরা ইংরেজি, কম্পিউটার দক্ষতা ও আর্থিক পরিকল্পনা, এই তিনটি কোর্স পরিচালনা করছি। পাঁচ ছয় বছরে আমাদের এখানে যারা শিক্ষা নিয়েছেন তারা এখনও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের মধ্যে আছেন। তারা আবার অন্যদের সহযোগিতা করতে এসডিআই একাডেমিতে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতে আসেন।

সাজ্জাদ জানান, গত বছর মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে মোবাইল অ্যাপভিত্তিক শিক্ষাপদ্ধতি চালু করতে হয়েছে। ফলে এসডিআইয়ের ব্যবস্থাপনা খরচ ব্যাপকভাবে কমে গেছে। আগে চার মাসের কোর্সের জন্য ২৯৯ মার্কিন ডলার দিতে হতো। এখন তা মাত্র ১৫ ডলার।

ফোর্বসের থার্টি আন্ডার থার্টিতে নাম আসা নিয়ে মঙ্গলবার দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে সাজ্জাদ বলেন, এই স্বীকৃতি তাঁর কাজের প্রসারে এবং এর প্রতি আস্থা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। আমরা যেন আমাদের লক্ষ্যের দিকে আরও এগিয়ে যেতে পারি সেটাই আশা করছি।