করোনা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না শিশুরাও, সুরক্ষিত রাখবেন কীভাবে?

শিশুদের মাস্ক পরাতে হবে
শিশুদের মাস্ক পরে থাকার অভ্যাস করাতে হবে

শুরু দিকে মনে করা হয়েছিল, ছোটদের করোনার তেমন ঝুঁকি নেই। কিন্তু নতুন ঢেউ থেকে নিস্তার পাচ্ছে না শিশুরাও। একটি ভাইরাস যত রূপ বদলায় বা ‘মিউটেট’ করে, তত নতুনভাবে আক্রমণ করার উপায় বার করে নেয়। কোভিডের নতুন প্রজাতি শিশুদের মধ্যেও দ্রুত ছড়াচ্ছে। এ অবস্থায় অভিভাবক হিসেবে কীভাবে সচেতন হবেন?

পুরনো নিয়ম : করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে মাস্ক পরা অতি আবশ্যক। তবে দু’বছরের ছোট শিশুকে মাস্ক পরানো সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে বাবা-মায়েদেরই সারাক্ষণ মাস্ক পরতে হবে। শিশু বিশেষজ্ঞ অপূর্ব ঘোষের মতে, ‘যে শিশুরা এখনও ব্রেস্টমিল্কের উপর নির্ভরশীল, তাদের মায়েদেরই সাবধানী হতে হবে। মাস্ক পরা এবং ঘন ঘন স্যানিটাইজ করা ছাড়া অন্য কোনও রাস্তা নেই।’

তবে ৩-৫ বছরের শিশুদেরও বেশিক্ষণ মাস্ক পরিয়ে রাখা সম্ভব নয়। তাদের মাস্ক খুলে ফেলার একটা প্রবণতা দেখা যায়। তাই বাবা-মায়েদের বাচ্চাদেরকে তাদের মতো করে বুঝিয়ে বলতে হবে, কেন মাস্ক পরা জরুরি। কেন হাত স্যানিটাইজ করা জরুরি। তবে তাদের বোঝাতে গেলে নিজেকেও উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা দরকার।

আপনাকে দেখেই আপনার সন্তান শিখবে। বাবা-মা বা বাড়ির অন্য কারও যদি সামান্য মাত্রায়ও কোনও উপসর্গ দেখা যায়, সঙ্গে সঙ্গে টেস্ট করিয়ে নিন। উপসর্গ দেখা গেলেই শিশুকে যতটা সম্ভব তাঁর কাছ থেকে দূরে রাখুন।

সামাজিক দূরত্ব : যেহেতু শিশুদের মাস্ক পরিয়ে রাখা মুশকিল, তাই সংক্রমণের মূল জায়গাটাই কম করতে হবে। অহেতুক বাইরে না বেরোনোই ভাল। যতই ঘরবন্দি হয়ে হাঁপিয়ে যান, শুধু শুধু রেস্তোরায় যাওয়া, পার্কে যাওয়া বা দোকান-বাজারে যাওয়া বন্ধ করুন। যদি বের হওয়ারে খুব প্রয়োজন হয়, তাহলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করবেন।

চিকিৎসক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘স্কুল তো বন্ধ হয়েই গেল। কিন্তু শিশুদের নিয়ে অন্য কোথাও খুব একটা না বের হওয়ায় উচিত। তাদের বাড়িতেই নানা রকম কাজে-খেলায় ভুলিয়ে ব্যস্ত রাখতে হবে।’ 

তার মতে, ছোটখাটো কারণে শিশুদের ডাক্তার দেখানোরও প্রয়োজন নেই। শিশুদের মধ্যে কোভিডের জন্য বাড়াবাড়ি রকমের অসুস্থতা এখনও দেখা যায়নি। কিন্তু শিশুদের থেকে যদি অন্যরা সংক্রমিত হন, তাহলে সেটা গুরুতর হতে পারে।

পুষ্টিকর খাওয়া : কোভিড-আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থা এখনও সেভাবে চোখে পড়েনি। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আগেই সাবধানী হয়ে যাওয়া প্রয়োজন। যেহেতু নতুন প্রজাতির ভাইরাস সম্পর্কে কেউ-ই সেভাবে কিছু আন্দাজ করতে পারছেন না, তাই সতর্ক থাকাই কাম্য।

শিশু বিশেষজ্ঞ ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শিশুদের খাওয়া-দাওয়ার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। মাল্টিভিটামিন এবং জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট খাওয়াতে হবে। তবে দুধ, ডিম, মাছ মাংসের মতো প্রোটিনে ভরপুর খাবার রোজকার খাবারে যেন অবশ্যই থাকে। সূত্র: আনন্দবাজার।