ডাক্তার হওয়া দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে তামান্নার

বাবা-মায়ের সঙ্গে তামান্না
বাবা-মায়ের সঙ্গে তামান্না

কুড়িগ্রামের মেয়ে তামান্না মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর থেকে দারিদ্র্য বাবা তারা মিয়ার দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে। মেয়েকে কিভাবে ভর্তি করাব সেই চিন্তায় ঘুম আসছে না তার। তামান্না জানালেন, পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে তার ডাক্তার হওয়াটা দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তামান্নার কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বেলদহ গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে। দুই বোনের মধ্যে বড় তামান্না। দারিদ্র্য জয় করে অজপাড়া গাঁ থেকে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তামান্না। কিন্তু ভর্তি ও পড়াশোনার খরচ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছে তার পরিবার।

তারামিয়া বলেন, আমার চার শতক বাড়িভিটা ছাড়া আরও কোনো সম্বল নেই। ভ্যানে করে গ্রামে গ্রামে কাপড় বেচে সংসার চালাই। তাই দিয়ে খেয়ে না খেয়ে চলে স্ত্রী-সন্তানসহ চারজনের সংসার।জমানো কোনো টাকা-পয়সা নেই। মানুষের সাহায্যে তামান্নার পড়াশোনা চলত। এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে বেচাকেনা তেমন নেই। এর মধ্যে মেয়ে মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে।

তামান্না এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ায় একটি এনজিওটি ২৪ হাজার টাকা বৃত্তি দিয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, বৃত্তির টাকা দিয়ে মেয়েকে কোচিংয়ে পড়ান। করোনাভাইরাসের সময় অনলাইনে ক্লাস করার জন্য মালয়েশিয়া প্রবাসী পরিচিত এক ব্যক্তি একটি মোবাইল ফোন কিনে দেন।

তামান্না নিজেও এখনও কোনো উপায় দেখতে পাচ্ছে না। তিনি বলেন, মেডিকেলে ভর্তি সুযোগ পেয়ে আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু নিমেষেই সেই অনুভূতি হারিয়ে গেছে। দারিদ্যের বাঁধা অতিক্রম করতে পারছি না। ভর্তি ও অন্যান্য খরচসহ প্রায় ৯০ হাজার টাকা লাগবে শুনেছি। এত টাকা আমাদের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব না। তাই ডাক্তার হওয়াটা দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কুড়িগ্রামের ডিসি মোহাম্মদ রেজাউল করিম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, মেডিকেলে চান্স পাওয়াটা আনন্দের সংবাদ। সে যদি সত্যি দরিদ্র হয়ে থাকে তাহলে ভর্তির জন্য যে সহযোগিতার প্রয়োজন, জেলা প্রশাসন সেটি দেখবে।