‘আমার মৃত্যুর পর ভালোবাসাটা অনুভব করবে’

চিরকুট
তামান্না আফরিন

গত শুক্রবার বরিশাল সদরের এআরএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী তামান্না আফরিন আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার দুইদিন পর তামান্নার লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিরকুটে তামান্না তার আত্মহত্যার কারণ জানিয়ে গেছেন।

তামান্নার নিজ ঘরের পড়ার টেবিলে গনিত খাতার শেষ পাতায় চিরকুটে লিখেছেন, ‘আমি আজ সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমার মৃত্যুর জন্য শুধু একজনই দায়ী। তার নাম হলো সাদমান গালিব। আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। কিন্তু ও (গালিব) আমার সাথে আর সম্পর্ক রাখতে চায় না। তাই আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না ভেবে সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমি সাদমানকে অনেক ভালোবাসি, ও বুঝল না। আশা করি আমার মরার পর ও (গালিব) আমার ভালোবাসাটা অনুভব করবে। আমি আর বেশী কিছু বলতে চাই না। বিদায় সাদমান।’

এদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, চিরকুটসহ থানায় সাদমান গালিবের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ জানিয়েছে, গালিবের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তাকে আটকের জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে।

নহিত তামান্নার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে তামান্নার বাবা ও মায়ের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে সে, তার ছোট বোন তার মার সাথে নানা বাড়িতে থাকত। এর সুবাদে নগরীর জুমির খান সড়কের সাদমান গালিব নামে এক ছেলের সঙ্গে তামান্নার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে।

মাঝে মাঝে তারা বিভিন্ন স্থানে দেখা করত এবং ঘোরাঘুরিও করতে। এ সময় গালিব তার ফোনে তাদের অন্তরঙ্গ মূহুর্তের কিছু ছবি ধারন করে। যা নিজ হেফাজতে রেখে সাম্প্রতিক সময়ে গালিব তামান্নর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে তামান্না। প্রেমিকের প্রতারণার কারণে ক্ষোভ এবং অভিমানে গত ২ এপ্রিল দুপুরে নানাবাড়িতে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে সে।

তামান্নার মরদেহ উদ্ধারকারী কোতয়ালী মডেল থানার উপপরিদর্শক অলিভ জানান, তামান্নার ব্যবহৃত একটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। মুঠোফোনে কিছু আলামত পাওয়া গেছে। সেগুলো যাচাইবাচাই করা হচ্ছে।

অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম বলেন, পুরো বিষয়টি আমরা তদন্ত করে অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হবে। অভিযুক্ত সাদমান গালিবকে আটকের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালানা করা হচ্ছে।