সন্তান হত্যার বিচার চাইলেন যবিপ্রবি শিক্ষক দম্পতি

যবিপ্রবি
সংবাদ সম্মেলনে সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে কাঁদলেন যবিপ্রবির শিক্ষক দম্পতি

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সন্তান হত্যার বিচার চাইলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সাত্তার ও তার স্ত্রী। গত বছরের ২৪ নভেম্বর তাদের বড় ছেলে ওয়াসেক সাত্তার আবীরের (২৫) রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ঢাকার হাতিরঝিল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু এখনো সেই ঘটনার কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানালেন তারা।

হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে (৪ এপ্রিল) রোববার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সাত্তার ও তার স্ত্রী সহকারী অধ্যাপক নাসিমা আক্তার জুঁই।

সংবাদ সম্মেলনে আবীরের মা নাসিমা আক্তার জুঁই বলেন, আবীর মালয়েশিয়ার পুত্রামালায় ইউনিভার্সিটির (ইউপিএম) সফট্ওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র ছিলেন। করোনার কারণে দেশে অবস্থান করছিল সে। গত বছরের ২৩ নভেম্বর রাতে যশোর থেকে তিনি ও আবীর ঢাকায় যান। ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় ফোন পেয়ে আবীর ঢাকার ভাড়া বাসা থেকে বাইরে যায়। ওই রাতে ফোনে ছেলে অসুস্থ শুনে হাসপাতালে গিয়ে দেখেন আবীরের লাশ। হাতিরঝিলের এক নম্বর ব্রিজের নিচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

তিনি দাবি করেন, তার দেবর ফজলুর রহমানের ছেলে ফয়সাল আহমেদ নয়ন ও নয়নের ভগ্নিপতি আবু মুরাদ ওইদিন সন্ধ্যায় আবীরকে ডেকে নিয়ে হাতিরঝিলে ফেলে হত্যা করে। রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে গিয়ে তিনি তাদের সেখানে দেখেছেন। অথচ ওই সময়ের মধ্যে তাদের সেখানে আসার কথা নয়। পারিবারিক বিরোধ থাকায় তারা এর আগে নাসিমা আক্তার জুঁইকেও হত্যার চেষ্টা করেছে বলে তিনি দাবি করেন।

অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, আবীরের মৃত্যুর পর হাতিরঝিল থানায় পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা করে। পরে তারা আবীরকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে নয়ন ও মুরাদকে আসামি করে আদালতে মামলা করেছেন। কিন্তু মামলার তেমন অগ্রগতি নেই। এজন্য সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে তারা সংবাদ সম্মেলন করছেন।

এ ব্যাপারে হাতিরঝিল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ও অপমৃত্যু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসাদ বিন আব্দুল কাদির বলেন, হাতিরঝিলের একটি ব্রিজ থেকে আবীর পানিতে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মগবাজারের ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্ত ও সুরতহাল প্রতিবেদনে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ওই স্থানের সিসিটিভি ফুটেজেও সে (আবীর) নিজে লাফ দিয়েছে এমন মনে হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনও তিনি পাননি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম, নাগরিক আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক মাস্টার নূর জালাল, সমন্বয়ক মাসুদুজ্জামান মিঠু প্রমুখ।