গ্রীষ্মে বাড়তে পারে করোনা, প্রধানমন্ত্রীর ৩ নির্দেশনা

শেখ হাসিনা

গ্রীষ্মে আবারো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই করোনা সংক্রমণ রোধে ৩টি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (৯ মার্চ) মন্ত্রিসভা বৈঠকে তিনি এসব নির্দেশনা দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে নির্দেশনার কথা জানান। মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সভাপতিত্ব করেন। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।

সেখানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন...আমি সব জায়গায় বলছি আমরা খুব কমফোর্ট জোনে আছি এটা যেন চিন্তা না করি। হ্যাঁ, আমরা অনেক দেশ থেকে ভালো অবস্থায় আছি, কিন্তু এটা সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা দেয় না যে আমরা একেবারে কমফোর্ট জোনে আছি।’

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘আমরা যে যেখানে থাকি, ভ্যাকসিন নিই বা না নিই, আমরা যেন অবশ্যই তিনটি জিনিস মেনে চলি। আমরা যেন অবশ্যই বাইরে মাস্ক ব্যবহার করি। যথাসম্ভব সতর্কতা অবলম্বন করি। তিন নম্বর হলো- পাবলিক গ্যাদারিং যেখানে হচ্ছে বিশেষ করে কক্সবাজার বা হিলট্র্যাকসে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় গ্যাদারিং হচ্ছে, সেখানে যেন একটা লিমিটেড সংখ্যায় থাকি। নিজেদের যেন একটা দায়িত্ববোধ থাকে, যেখানে বেশি সংখ্যক লোক আছে সেখানে যেন আমি না যাই। যারা যাবেন তারা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি।’

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে এত বেশি লোক হুমড়ি খেয়ে পড়ছে, কেউ মাস্ক পরছে না। গত বছর মাস্ক না পরার জন্য মিয়ামি বিচে পুলিশ পিটুনি দিয়েছে, জলকামান ব্যবহার করেছে। সেজন্য আমরা প্রত্যেকে যেন একটা দায়িত্ব পালন করি, পাবলিক গ্যাদারিংয়ে আমি যেন অবস্থা বুঝে অংশ নিই।’

তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে আমাদের বিশেষজ্ঞরা আলোচনা করছেন, আমরা যেন খুব কমফোর্ট ফিল না করি, গত বছর আমাদের সংক্রমণ সর্বোচ্চ হয়েছিল গ্রীষ্মকালে। এটা নিশ্চিত নয় যে এটা এবার উঠবে না।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম শীতকালে বোধ হয় পিকে (সর্বোচ্চ সংক্রমণ) চলে যাবে, কিন্তু আমাদের পিক ছিল হাই সামার। এপ্রিল, মে ও জুন আমাদের হাই সামার হবে। বিশেষজ্ঞরা যেটা বলেছেন সেই বিষয়ে আমাদের সবাইকে দৃষ্টি দিতে বলা হয়েছে, যেন আমরা যারা যার জায়গা থেকে প্রতিষ্ঠানিক ব্যক্তি বা দলীয় বা পারিবারিক লেভেল থেকে আমরা যাতে সতর্ক থাকি।’

গত কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে মানুষের মধ্যে করোনা টিকা নেয়ার হার কমেছে এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর কাজ করছে। দু-একদিনের মধ্যে তারা এটা নিয়ে কথা বলবে।’

যেভাবে মানুষ মাস্ক পরছে না, সেখানে আগের মতো আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটা প্রাথমিকভাবে মোটিভেশনাল। পরে অবস্থা কেমন হয়, মে মাসে গিয়ে দেখা যাক। একেবারে গ্রামীণ পর্যায়ে এখন মোটিভেশনাল কাজ হচ্ছে।’

যদি আবার সংক্রমণ বাড়ে তবে লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লকডাউনের কথা আমরা এখনও ওইভাবে চিন্তা করিনি। যদি বাড়ে সরকার বসে একটা সিদ্ধান্ত নেবে। মানুষের লাইফ ও জীবিকা, দুটোকে নিয়ে ব্যালেন্স করে পুরো টাইমটা কাজ করে আসছি। সেভাবে যেটা লজিক্যাল আমরা সেটাতেই যাব।’